পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: আর জি করে (RG Kar) ঘটনার পর প্রায় চার মাস কেটে গিয়েছে। এখনও বিচার মেলেনি। তারিখের পর তারিখ কোর্টে শুনানি চলছে। মাঝে মাঝে শুনানি পিছিয়েও যাচ্ছে। আদৌ নির্যাতিতা তরুণী কি বিচার পাবেন? সাধারণ মানুষের রাত দখল, পথে নেমে আন্দোলনে সামিল হওয়া সব কিছুর পরও বারবার এই প্রশ্ন নাড়া দিয়ে উঠছে। এবার আর জি করে নির্যাতিতা তরুণীর বিচারের দাবি উঠল বিয়ের অনুষ্ঠানেও। বাঁকুড়ায় পেশায় চিকিৎসক অয়ন মিদ্যা ও শিক্ষিকা ঊষসী কর নিজেদের বিয়েতে স্মরণ করলেন তিলোত্তমাকে। বিচারের দাবিতে একসঙ্গে লাগাতার আন্দোলনে থাকার পাশাপাশি রীতিমত পোস্টার দিয়ে অন্যদের স্মরণ করিয়ে দিলেন তিলোত্তমার বিচার এখনো বাকি।
তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন সময় রাস্তায় নেমে আন্দোলনে দেখা গেছে পেশায় চিকিৎসক অয়ন মিদ্যাকে। শুধু বাঁকুড়ায় নয়, যেখানেই এই ইস্যুতে আন্দোলন হয়েছে সেখানেই হাজির থাকার চেষ্টা করেছেন তিনি। নিজের মত করে আন্দোলনে থাকার চেষ্টা করেছেন ঊষসী করও। চার হাত সম্প্রতি এক হয়েছে। আর নিজেদের জীবনের বিশেষ দিনেও তিলোত্তমার বিচারের দাবি তুলেছেন অভিনবভাবে। তিলোত্তমার প্রতীকী ছবি রাখা হয়েছে বিয়ের মণ্ডপে। বৌভাতের অনুষ্ঠানে পরিবারের প্রয়াতদের পাশাপাশি স্থান পেয়েছেন তিলোত্তমাও।
এদিকে, আর জি করের নৃশংস ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয় রাইয়ের মুখে মুখে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার বিনীত গোয়েলের নাম ওঠা মাত্রই গত ১২ নভেম্বর শুনানির আগে বদলে গিয়েছিল ছবিটা। সঞ্জয় যাতে বাইরে কিছু বলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে, তাকে ঘিরে বেনজির নিরাপত্তার দেওয়াল তুলে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। এবার পুলিশ আরও একধাপ এগিয়ে আরও কড়া ব্যবস্থা নিল। এবার সঞ্জয়কে আদালতে ঢোকানোর সময়ই পুলিশকর্মীরা সবাই মিলে গাড়ি বাজাতে শুরু করে। সজোরে তালি মারা হয় পুলিশ ভ্যানের গায়ে। সেই সঙ্গে উচ্চস্বরে বাজানো শুরু হয় হর্ন। এর জেরে কান পাতা দায় হয়। আসলে সঞ্জয়ের চ্যাঁচামেচি যাতে কোনওভাবেই উপস্থিত মানুষজনের কানে না পৌঁছায় তাই এই ব্যবস্থা।
বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগের পরই, আর জি কর-কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়কে আদালতে ওঠানোর সময় বেনজির নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলেন পুলিশকর্মীরা। ৪ নভেম্বর, আর জি কর ধর্ষণ, খুনের মামলায় চার্জ গঠনের দিন, প্রিজন ভ্যান থেকে প্রথমবার মুখ খোলে সে। তারপর আরও একধাপ এগিয়ে, চক্রান্তের অভিযোগ প্রসঙ্গে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নাম নেয় সঞ্জয়। এরপরই সঞ্জয়কে আর আদালতের বাইরে মুখ খোলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।