তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: বেশ কয়েকদিন ধরেই মেদিনীপুরের জঙ্গল থেকে আসা ৩০ থেকে ৩২ টি হাতির একটি দল বিষ্ণুপুর ও জয়পুরের জঙ্গলে দাপাদাপি করছিল। বেশ বিরক্তই ছিল স্থানীয় চাষিরা। এবার যখন হাতিগুলির পুনরায় মেদিনীপুরের জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে, ঠিক তখনই বাঁকাদহ রেঞ্জের চিলিং বাঁধের কাছে একটি হাতি জন্ম দিল শাবকের।


রাতভর অন্যান্য হাতিগুলি মা ও বাচ্চাকে আগলে রেখে পাহারা দেয়। পাহারা দেয় বন কর্মীরাও। তারপর ধীরে ধীরে হাতির দলটি সদ্যজাত বাচ্চাকে নিয়ে মেদিনীপুরের জঙ্গলের দিকে অগ্রসর হয়েছে। জানা যায় এখনও পর্যন্ত ছোট্ট বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ঠেলে ঠেলে মা হাতি প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে। যেহেতু 'সারদা মায়ের' এলাকা তাই গ্রামবাসী ও বন কর্মীরা শখ করে হস্তি শাবকের নাম রেখেছে 'সারদা।'


কখনও খাবার না পেয়ে লোকালয়ে এসে হামলা, কখনও বুঝতে না পেরে হাতিদের বেঘোরে প্রাণ হারানোর ভুরিভুরি ঘটনার সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গ।  খাবারের খোঁজে অনেকসময়ই হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসে। কখনও খাবার পায়, কখনও আবার চাষের জমিতে হামলা চালায়। কখনও আবার হাতি নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়। তবে এবার ঘুমের ঘোরে আর দাঁতালের মুখোমুখি হতে হবে না। বাঁকুড়া উত্তর বর্ণ বিভাগের বেলিয়াতোড় ফরেস্ট রেঞ্জের উদ্যোগে এক বিশেষ কৌশল নেওয়া হয়েছে বুনো হাতিদের জন্য। উত্তরবঙ্গ থেকে বিশেষ ঘাস এনে লাগানো হয় জঙ্গল এলাকায় এবং হাতিদের প্রিয় খাবার ও খাবার যোগ্য যে সমস্ত দেশি ফলের গাছ রয়েছে যেমন কলা, কাঁঠাল, ইত্যাদি গাছ লাগানো হচ্ছে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জঙ্গলে।এতে খুশি সাধারণ মানুষ।


আরও পড়ুন, আবাস নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি নবান্নর, 'যাদের নাম বাদ পড়েছে..'


আবার চলতি বছরের লক্ষ্মীপুজোতে উঠে এসেছে বাংলার এক পৃথক দৃশ্য। যেখানে হাতির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে গজলক্ষ্মীর আরাধনা বাঁকুড়া জেলায়। হাতির হাত থেকে মাঠের ফসল বাঁচাতে এই আরাধনা গ্রামের মানুষের। জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম রামকানালী। যেখানে হামেসায় ঢুকে পড়ে হাতির দল। ক্ষতি করে এলাকার ফসল। সেই হাতির হাত থেকে ঘরের লক্ষী অর্থাৎ মাঠের ফসল বাঁচাতে গ্রামে শুরু হয়েছিল গজ লক্ষীর আরাধনা। প্রায় শতাব্দী প্রাচীন এই পুজো। প্রাচীন রীতি রেওয়াজ ও বিশ্বাসের উপর ভর করে বাঁকুড়ার রামকানালী গ্রামে গজলক্ষ্মীর আরাধনায় মেতে ওঠেন গ্রামের মানুষ।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।