তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: বিষ্ণুপুর (Bishnupur) পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে সাক্ষী গোপাল পাড়ায় মল্লরাজা বীরহাম্বীরের আমলে তৈরি প্রাচীন সাক্ষী গোপাল মন্দিরের ভিতরে রাধামাধমবের মূর্তি। সেখান থেকেই রাজা বীরহাম্বীর দেওয়া পায়ের নুপূর-সহ লক্ষাধিক টাকার সোনার গহনা নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। বিষ্ণপুরের সাক্ষী গোপাল মন্দিরে চুরিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাচীন সাক্ষী গোপাল মন্দিরের ভিতরে থাকা মূর্তিগুলি সাজানো ছিল সোনার অলঙ্কার দিয়ে। রাধামাধবের বিগ্রহের পায়ে ছিল তৎকালীন মল্লরাজা বীরহাম্বীরের দেওয়া নুপূর। ছিল সোনার তৈরি বাঁশিও। মন্দিরের ভিতরে ছিল প্রণামী বাক্স। বুধবার রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা মন্দিরের তালা ভেঙে সমস্ত সোনার অলঙ্কার নিয়ে চম্পট দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মন্দিরের পুরোহিতের নজরে ঘটনাটি পড়তেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
আরও পড়ুন - Bankura News: বাঁকুড়ায় লোকালয়ে দাপাচ্ছে হাতি, বন দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ স্থানীয়দের
বিষ্ণুপুরের সাক্ষী গোপাল মন্দিরে চুরি ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনার জানাজানি হতেই মন্দিরের সামনে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই খবর দেন বিষ্ণুপুর থানায়। স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম মোহন্ত বলেন, 'আমাদের মোহন্ত পরিবারের প্রাচীন মন্দির থেকে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকার সোনার গয়না এবং প্রণামী বাক্স রাতের অন্ধকারে লুঠ করে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। রাতে আমাদের প্রত্যেকের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় দুষ্কৃতীরা। মন্দিরে ৮ থেকে ৯টি তালা লাগানো থাকত। প্রত্যেকটা তালা ভেঙে গয়না এবং প্রণামী বাক্স চুরি করেছে তারা। শুধু তাই নয়, দুষ্কৃতীরা রাধা ও গোপালের মূর্তিরও ক্ষতি করেছে। মন্দির চত্বরে সিসিটিভি লাগানোর পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু তার আগেই এই ঘটনা ঘটে গেল।'
আর এক স্থানী বাসিন্দা গোপাল চন্দ্র গুহ বলছেন, 'আমি চোটবেলা থেকেই মায়ের জন্য ফুল তুলি। মা আমাকে একাধিকবার বিভিন্ন সময়ে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন। আজকে সেই মায়ের মন্দিরেই চুরি হয়ে গেল। চোরেদের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।' বিষ্ণুপুরের প্রাচীন মন্দিরে এমন চুরির ঘটনায় এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মন্দির নগরীর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।