প্রসূন চক্রবর্তী , বাঁকুড়া : এই জন্যই বলে বাঁদরামি। গাছপালা কমে যাওয়ায় লোকালয়ে খাবারের খোঁজে ঢুকে পড়ে বাঁদর বা হনুমানের দল। মানুষও কলাটা-মুলোটা-আলুটা দিয়ে তাদের খিদে মেটায়। কিন্তু এ বাঁদর তাতে সন্তুষ্ট নয়। একটা মাত্র বাঁদর এক সপ্তাহ ধরে পাগল করে ছেড়েছে বাঁকুড়ার বড়জোড়াকে।
গত এক সপ্তাহ ধরে একটি বাঁদরের দাপাদাপিতে আতঙ্কিত এলাকার শিশু থেকে বৃদ্ধ। একের পর এক মানুষের উপর হামলা চালায় এই বাঁদরটি। বাঁদরের কামড়ে জখম হয়েছে দুই স্কুল ছাত্রসহ বেশ কয়েকজন । বন দফতরের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে বহু কষ্টে শেষমেষ বাগে আনা হয় বাঁদরটিকে। ফলে এই বাঁদরের কামড় খাওয়ার ভয়ে রাস্তায় বেরোতেই ভয় পাচ্ছিলেন মানুষ।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে একটিমাত্র বাঁদরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে মানুষ। ভীত , আতঙ্কিত বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়ার বাসিন্দারা। বড়জোড়ার রাজারবাঁধ, বিজয় ময়দান এলাকার বাসিন্দাদের অনেককে আক্রমণ করার পরে সোমবার সকাল থেকেই বাঁদরের আক্রমণ শুরু হয় বড়জোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। সকালে এই বিদ্যালয়ে দুইজন ছাত্রকে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করার পরে আবার দুপুরে সে হামলা চালায়। ছাত্ররা যখন মিড-ডে মিলের জন্য লাইনে দাঁড়াবে, ঠিক তখনই সেখানে হাজির হয় বাঁদরটি। ছাত্ররা আতঙ্কে ক্লাসে ঢুকে পড়ে। দরজা,জানালা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বড়জোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ বামদেব মুখোপাধ্যায় জানান, ' সকালে আমাদের বিদ্যালয়ে অন্য একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন চলে। তাদের দু-জন ছাত্রকে এই বাঁদরটি কামড়ে দিয়েছে। তারপর ফের দুপুরবেলায় আসে। ছাত্রদের তাড়া করলে তারা আতঙ্কে ক্লাসে ঢুকে পড়ে। আমরা বনদফতরকে খবর দিয়েছিলাম। '
অন্যদিকে বাঁদরের আক্রমণে আহত সুনীতি পাঁজা নামের এক মহিলা। তিনি বলেন, ' বাড়ির উঠানে কাজ করছিলাম। সেই সময় হঠাৎ বাঁদরটি আমার বুকের ওপর লাফিয়ে পড়ে। আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমার হাতে আঁচড়ে, কামড়ে দেয়, বুঝে উঠতে পারিনি। আমরা আতঙ্কিত।'
সোমবার বনবিভাগের কর্মীরা স্কুলে পৌঁছে দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় বাঁদরটিকে স্কুলের একটি বাথরুমে আটকে রেখে নিজেদের কব্জায় নিয়ে আসে। বড়জোরার রেঞ্জার সৈয়দ সইফুর রহমান জানান, 'বাঁদরটিকে ধরা হয়েছে এবং তার চিকিৎসাও করা হয়েছে। এখন বাঁদরটি ভালো আছে। খুব তাড়াতাড়ি আমরা তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসব।'
আরও পড়ুন :
কাঠফাটা গরমের মধ্যেই এল খুশির খবর, এই দিন থেকেই শহর ও জেলায় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি