পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এক মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলল বাঁকুড়ায় (Bankura) তৃণমূলের (TMC) আন্দারথোল অঞ্চল পার্টি অফিস। বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে দলের জেলা নেতৃত্বের দফায় দফায় বৈঠকে মেলে সমাধান সূত্র। এরপরেই শুক্রবার খোলা হয় পার্টি অফিসের তালা। এনিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। 


বাঁকুড়ার আন্দারথোল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পদ নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তার জেরে স্থানীয় তৃণমূলের পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়েছিল দলেরই একাংশ। এক মাস বন্ধ থাকার পর খুলল শাসক দলের বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের আন্দারথোল অঞ্চলের সেই পার্টি অফিস। দলের যে বিক্ষুব্ধরা তালা ঝুলিয়েছিলেন, শুক্রবার তাঁরাই পার্টি অফিসটি খুলে দিলেন। নতুন করে পার্টি অফিসে দলের নামও লেখা হল।


আন্দারথোল গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পায় তৃণমূল। কিন্তু, সংরক্ষণের গেরোয় প্রধান পদ পায় বিজেপি।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পদ নিয়ে শুরু হয় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের নির্দেশ অমান্য় করে ভোটাভুটিতে উপপ্রধান নির্বাচিত হন তাইবুল শেখ। এতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে তৃণমূলের একটা বড় অংশ। দলের পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ অংশের দফায় দফায় বৈঠকে সমাধান সূত্র মেলে।


আন্দারথোল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য প্রদীপকুমার মণ্ডল বলেন, "দলীয় প্রতীকে যাঁরা জিতেছিলেন, সেই মুহূর্তে দলীয়ভাবে একজন উপপ্রধান হয়েছিলেন। দলের মধ্যে ব্যাপার নয়। আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ তৈরি হয়। দলীয় অফিসের বসে সেই বিক্ষোভ মিটে গেছে। আর কোনও সমস্যা নেই। আবার দলীয়ভাবে কাজে হবে। সামনে লোকসভা ভোট আসছে। সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। "


বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সেরকম বিশেষ বড় কিছু কারণ নয়। বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে আমাদের পঞ্চায়েতের সদস্যদের মধ্যে একটা মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল। সেই মতপার্থক্য থেকে ক্ষোভে আজ এক মাস ধরে কোনও পঞ্চায়েত সদস্য আসছিলেন না। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিয়েছি।" 


এই ইস্যু নিয়ে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ ঘোষ বলেন, "এখন ঠিক হয়েেছে। কাটমানির ভাগাভাগি নিয়ে হয়তো নিজেদের মধ্য়ে বোঝাপড়া হয়েছে। কে কত টাকা কাটমানি পাবে। প্রধান তো বিজেপির। উপপ্রধান ভোটাভুটির মাধ্য়মে হয়েছে। সেই উপপ্রধানকে ওরা মানেনি। আজকে হয়তো তিনি বলেছেন আমরা সবাই মিলে ভাগবাঁটোয়ারা করে খাব। সেইজন্য তৃণমূল কংগ্রেস আবার সবাইকে নিয়ে সেটিং করে চলতে চাইছে। কিন্তু এই সেটিং থাকবে না। লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে সেটিং তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।"

দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পার্টি অফিসে তালা ঝোলায় অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসক দল। মাস ঘুরতে ফের পার্টি অফিস খোলায় কাটল সেই অস্বস্তি।