পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : জমি বিবাদের জেরে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ও তাঁর ছেলের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এবার সরব হলেন সহকর্মী ও তাঁর স্কুলের ছাত্ররা। এদিন বাঁকুড়া শহরের রাস্তায় মৌন মিছিল করেন তাঁরা। বাঁকুড়া শহরের খ্রিস্টান কলেজিয়েট স্কুল প্রাঙ্গন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের রাস্তা ঘুরে শেষ হয় ওই স্কুল প্রাঙ্গনেই। ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।


গত রবিবার সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ বাঁকুড়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনচটি এলাকার রুই দাসপাড়ায় অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মথুরামোহন দত্ত (৬৩) এবং তাঁর স্ত্রী মল্লিকা দত্ত এবং তাঁদের ছোট ছেলে শ্রীধর(২৭)-কে তাঁদের বাড়ির উঠোন থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ও তাঁর ছেলের।


ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় বাঁকুড়া শহরে। এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার অভিযুক্ত পিন্টু রুইদাস ও তাঁর স্ত্রী নমিতা দাস এবং তাঁদের দুই ছেলে মহেশ্বর ও বিশ্বেশ্বরকে গ্রেফতার করা হয় দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে। ঘটনার জেরে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসী। বাঁকুড়া শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাটপুরের বাসিন্দা বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজিয়েট  স্কুলেরই শিক্ষক প্রদ্যুৎ মুখোপাধ্যায়ের সহকর্মী ছিলেন মথুরামোহন । তিনি বলেন, শুনেছিলাম মথুরাবাবুর সঙ্গে প্রতিবেশীর বিবাদ চলছিল। কিন্তু তাঁর পরিণাম যে এতটাই মর্মান্তিক হবে তা ভাবা যায় না। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি তুলছি। 


একই দাবি তুলেছেন ওই স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র কেন্দুয়াডিহি এলাকার বাসিন্দা ঋজু ঘোষ। তিনি বলেন, মৌনতাকে অবলম্বন করে চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 


বিজেপির জেলা সম্পাদক স্বপন মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই শহরে জমি বিবাদ ক্রমেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দারা। এই খুনের ঘটনা তারই প্রমাণ। পুলিশ প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এই ঘটনা বলে আমার মনে হয়। এর দায় বাঁকুড়া পুলিশ ও পুরসভার।


যদিও বাঁকুড়া পুরসভা চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অন্যায় করে পার পাওয়া যাবে না। আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ প্রশাসন যে ভাবে তদন্ত করছে তাতে তাঁদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। 


বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, 'ঘটনার পরেই আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছি।  এই খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। শহরে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।' তাঁর আবেদন, প্রতিবেশীর সঙ্গে সমস্যা থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।