তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া : বাঁকুড়ায় (Bankura) তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের ৩ কোটি টাকার বাড়ি। ৫ বছরে মানুষের নয়, উন্নয়ন হয়েছে শুধু প্রধানেরই! ফেসবুকে পোস্ট করে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ বিজেপির (BJP) বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতির। সম্মানহানির জন্য এসব বলা হচ্ছে। যে কোনও তদন্তে রাজি। মন্তব্য তৃণমূলের (TMC) পঞ্চায়েত প্রধানের। 


শাসক থেকে বিরোধী, একাধিক নেতার সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলা ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়ার অযোধ্যা পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়ির ছবি পোস্ট করে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি নীরজ কুমার। 


ঠিক কী অভিযোগ


নিজের ফেসবুক পেজে একটি দোতলা বাড়ির ছবি পোস্ট করে, বিজেপি নেতা লিখেছেন, পঞ্চায়েতের (Panchayat) দুর্নীতির টাকায় ৫ বছরে গজিয়ে উঠেছে বিলাসবহুল অট্টালিকা। ঠিক যেমন হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে শান্তিনিকেতন, পশ্চিমবাংলার যুবরাজের বাড়ি। তেমনই অযোধ্যা পঞ্চায়েতের প্রধান গুরুদাস ব্যানার্জির ৩ কোটির বাড়ি। 


বিজেপি নেতার ফেসবুক পোস্টে যে বাড়ির ছবি দেওয়া হয়েছে, সেটি অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিড়রা গ্রামের। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিশাল এই বাড়ির মালিক তৃণমূল পরিচালিত অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগে এই বাড়ি ছিল না। এখন খুব বড় বাড়ি হয়েছে। এসি লাগিয়েছে, মোজাইক হয়েছে। আগে পরিস্থিতি ভাল ছিল না। এটা সব গ্রামবাসীই জানে।


আরও অভিযোগ


শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে টাকা চাওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আমাদের বাড়ি নেই। সরকারি প্রকল্পে বাড়ির কথা বললে ১০ হাজার টাকা চায় তৃণমূল নেতারা। যদি ১০ হাজার টাকা দিয়ে দিই, তাহলে ঘর করব কী করে? বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি নীরজ কুমার বলেছেন, 'কলকাতায় অভিষেক ব্যানার্জীর বাড়ি শান্তিনিকেতনের মতোই অযোধ্যা পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়ি। তাঁর বাড়িতে ইটালিয়ান মার্বেল ব্যবহার করা হয়েছে। পুরো বাড়িতে সোলার বিদ্যুতের ব্যবস্থা, পঞ্চাশ হাজারি সিঁড়ির পাত, তিন লাখ টাকার টিভি আর ভেতরের ডেকোরেশন দেখলে মনে হবে তাজ হোটেলে পৌঁছে গেছেন। এলাকার উন্নয়ন হয়নি। শুধুমাত্র প্রধানের উন্নয়ন হয়েছে।'


অভিযোগ অস্বীকার


বিষ্ণুপুরের অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, বাবা BLRO অফিসে চাকরি করতেন। ভাইয়ের ওষুধের দোকান আছে। আমি আগে বালির ব্যবসা করতাম। এর আগে বাড়ি একতলা ছিল। পরে দোতলা সহ অন্যান্য কাজ করা হয়েছে। সম্মানহানির জন্য এসব করা হচ্ছে। যে কোনও ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি।


বিজেপি নেতার ফেসবুক পোস্টের পর থেকেই এখন বিষ্ণুপুরে অন্যতম চর্চার বিষয় এই বাড়ি! 


আরও পড়ুন-চিটফান্ড মামলায় হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূল নেতা রাজু সাহানি গ্রেফতার