পূর্ণেন্দু সিংহ, তালডাংরা : পুরসভায় ভাল কাজ করলে ও মানুষ চাইলে তবেই টিকিট দেবে দল। পুরভোটের আগে এবার দলীয় নেতা-কর্মীদের কড়াবার্তা দিলেন তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক(TMC MLA)। মানলেন কাজ না করার ফলে, বিধানসভা ভোটে খারাপ ফলের ঘটনাও। এদিকে ঘাসফুল শিবির নতুন মুখ এনে ভোটে জিততে চাইছে বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি(BJP)।


তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী(Arup Chakraborty) বলেন, মানুষ যদি না চায়, দল আপনাকে টিকিট দিতে পারবে না। আমাদের একটা দোষ কী জানেন, যখন ভোটে দাঁড়াই, তখন মানুষের কাছে যাই, জোড়হাত করি, আর ভোটে জিতে গেলে আমাদের লেজ বেরিয়ে যায়।


পুরভোটের মুখে ফের টিকিট পাওয়া নিয়ে, দলীয় কর্মীদের কড়াবার্তা দিলেন আরেক তৃণমূল বিধায়ক। নারায়ণ গোস্বামীর পর, এবার অরূপ চক্রবর্তী।


রবিবার কলকাতায় পুরভোট। কিন্তু রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় বকেয়া ভোট কবে হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে, এক কর্মিসভায় তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক সর্তক করে বললেন, মানুষ চাইলে তবেই টিকিট দেবে দল। ভোটে জেতার পর অনেকে মানুষের থেকে দূরে সরে যান বলেও মন্তব্য করেন অরূপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, টিকিট, যে যতই নাম পাঠান, টিকিট কে পাবেন, সে সিদ্ধান্ত হবে পরে। আমি যদি পুরসভায় থেকে ঠিক কাজ করি, আমাকে টিকিট দেবে দল। আমি যদি ঠিক কাজ না করি আমাকে দেবে না। তারাই দলীয় কর্মী হিসেবে যাবে, আগে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, আমিই তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক, তাহলেই তাঁরা টিকিট পাবে এবং তাঁরা জিতবে, সকলে সমর্থন করবে।


এক সপ্তাহ আগে একই হুঁশিয়ারি সুর শোনা গেছিল উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর গলায়। নারায়ণ গোস্বামী বলেছিলেন, আমার হাতে সিগারেটের প্যাকেট গুঁজে দিলে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া যাবে না। তৃণমূলের প্রার্থী হতে গেল একটাই কাজ, আপনার ওয়ার্ডের মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা।


এবার দলীয় নেতা-কর্মীদের এই বার্তা দিলেন তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক। গত বিধানসভা নির্বাচনে, বাঁকুড়ার ১২টি আসনে বিজেপি জিতেছে ৮টিতে। তৃণমূল মাত্র চারটিতে। বিজেপির হয়ে জিতেও, তৃণমূলে ফিরে এসেছেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। তবে বিধানসভা ভোটের নিরিখে দেখা যাচ্ছে, বাঁকুড়া পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ৯টি ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল। দলের নেতা-কর্মীদের জনসংযোগের অভাবের কারণেই খারাপ ফল বলে মনে করছেন তালডাংরার বিধায়ক। 


তিনি বলেন, পুর এলাকায় কাউন্সিলররা কি জিতে আর মানুষের কাছে যায় না ? উত্তর- যায় না বলেই হেরে যায়। জিতে যাব, মানুষের কাজ করব না। অহংকার বেড়ে যাবে, এ করলে তৃণমূল করা যাবে না।


যদিও বিজেপির রাঢ়বঙ্গ জোনের কনভেনর পার্থ কুণ্ডু বলেন, পুর পরিষেবা দিতে ব্যর্থ, কাউন্সিলরদের ভূমিকা নেই। জিতে বাড়িতে ঢুকে থাকে, কাটমানি নেয়। মানুষ প্রত্যাখান করেছে। তাই চিন্তা করছেন- নতুন মুখ এনে ভোটে জিততে চাইছে।


তৃণমূল প্রার্থী বাছাই নিয়ে সচেতন। অন্যদিকে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। সব মিলিয়ে পুরভোটের আগে সরগরম বাঁকুড়ার রাজনীতি।