সমীরণ পাল, বারাসত:  মরণাপন্ন রোগীকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে হন্যে হয়ে ঘোরার দৃশ্য অজস্র বার দেখেছে এ শহর। কোনক্রমে রোগী বাঁচলে রক্ষা, তবে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনাই বেশি। তা রুখতে এ বার অভিনব পদক্ষেপ বারাসাত সদর হাসপাতালের (Barasat District Hospital) এখন থেকে রাতে কোনও রোগীকে বারাসাত সদর হাসপাতাল থেকে অন্যত্র রেফার করা যাবে না বলে নির্দেশিকা জারি করলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  


দূর-দূরান্ত থেকে বারাসাত সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন সাধারণ মানুষ। সেখান থেকে রোগীকে অন্যত্র রেফার (Patient) করা হলে সমস্যায় পড়েন তাঁরা। তাঁদের সেই সুরাহা দিতেই এই সিদ্ধান্ত। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশিকা জারি করেন। তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে রাতে আর কোনও রোগীকে বারাসাত হাসপাতাল থেকে অন্যত্র রেফার করা যাবে না। রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় একান্তই যদি অন্যত্র, বিশেষ করে কলকাতার হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়, সে ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই স্থানান্তরণের যাবতীয় দায়িত্ব নেবে।


আরও পড়ুন: Bankura News: অবৈধ পোস্ত চাষের রমরমা রুখতে বাঁকুড়ায় এ বার ড্রোনের নজরদারি


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রোগীকে যেখানে স্থানান্তরিত করা হবে, সেই হাসপাতালে আদৌ শয্যা খালি রয়েছে কি না, ভাল চিকিৎসক রয়েছেন কি না, হাসপাতালের তরফেই সেই সংক্রান্ত খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। এমনকি রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে যে অ্যাম্বুল্যান্সের দরকার পড়বে, দায়িত্ব সহকারে তার ব্যবস্থাও করা হবে হাসপাতালের তরফেই।


হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “রোগীর আত্মীয়দের যাতে কোনও হয়রানির শিকার না হতে হয়, তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত। রোগী স্থানান্তরণের ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সব দিকে নজর রাখবেন। সে ক্ষেত্রে রাতবিরেতে সমস্যায় পড়তে হবে না তাঁদের। আবার কলকাতা শহরে চেনাশোনা না থাকলেও অসুবিধায় পড়বেন না কেউ। তবে একান্ত প্রয়োজন না পড়লে, রাতে রোগীকে অন্যত্র রেফার করাই হবে না।”


জেলার হাসপাতাল থেকে শহরে রেফার করা রোগী নিয়ে প্রায়শই নাকাল হন সাধারণ মানুষ। কিছু না জেনে চিকিৎসকেরা শহরের কোনও হাসপাতালে রেফার করে দিলেও, সংশ্লিষ্ট ওই হাসপাতালে এসে দেখা যায়, রোগী ভর্তি নেওয়ার মতো অবস্থাই নেই সেখানে। তাকে ফের সেখান থেকে অন্যত্র ছুটতে হয়। অথবা মরণাপন্ন রোগীকে নিয়েই শুরু হয় টানাপোড়েন এবং ঝামেলা। তাই বারাসাত সদর হাসপাতালের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন জেলার মানুষ।