সমীরণ পাল, কলকাতা: আর জি কর-কাণ্ডের (R G Kar News) প্রতিবাদে রাতদখল ঘিরে বারাসাত কলোনি মোড়ে তুলকালাম কাণ্ড। মত্ত অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে ৫ মহিলা সহ ১৮ জন গ্রেফতার করা হয়। এদিন ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করল বারাসাত আদালত। 

কলোনি মোড়ে তুলকালাম: আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাতদখল কর্মসূচি ঘিরে তুলকালাম বাঁধল বারাসাত কলোনি মোড়ে। গতকাল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে টেনে-হিঁচড়ে প্রতিবাদীদের সরাল পুলিশ। পাল্টা মত্ত অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনায় ৫ মহিলা সহ ১৮ জন প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে প্রতিবাদীদের টেনে হিঁচড়ে সরানো হয়, তারপর তোলা হয় প্রিজন ভ্য়ানে। এমনকী এক শিশুর গায়ে পুলিশ হাত তোলে বলে অভিযোগ।



আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে গোটা দেশ। রাতদখল, মহামিছিল, আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ, একের পর এক কর্মসূচির দাবি শুধু একটাই, বিচার চাই। বুধবার রাতে বারাসাত কলোনি মোড়ে রাতদখলে কর্মসূচি করেন প্রতিবাদীরা। পুলিশের দাবি, তার জেরে জাতীয় সড়কে যানজট হয়। আটকে পড়ে পণ্য়বাহী গাড়ি। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ বারাসাতের SDPO-র নেতৃত্বে সেখানে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। শুরু হয় ধরপাকড়। বিক্ষোভকারীদের টেনে-হিঁচড়ে তুলে দেয় বারাসাত থানার পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। এক আন্দোলনকারী বলেন, "আমরা নির্দোষ। আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমাদের প্রতিবাদের অধিকার, আমাদের কথা বলার অধিকার, আমাদের নিরাপদ থাকার অধিকার চেয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম। পুলিশ যা করছে, তাতে পুলিশের মুখ আছে? এটা থামার নয়। ৭ বছরের একটি বাচ্চাকে মেরেছে। তার মায়ের সঙ্গে হাত ধরে প্রতিবাদে এসেছিল। প্রশাসন ভয় পাচ্ছে। গণঅভ্য়ুত্থানকে ভয় পাচ্ছে।'' আরেক আন্দোলনকারীর অভিযোগ, "আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। পুলিশ এসে যথেষ্ট অভব্য় ভাষায় কথা বলে। বিভিন্ন হুমকি দেয়। গায়ে হাত তোলার হুমকি দেয়। তারমধ্য়ে একটা বাচ্চাও ছিল, যে বাচ্চাকে কালকে রাতে কিন্তু পুলিশ গায়েও হাত দিয়েছে।''

পুলিশের পাল্টা দাবি, পুলিশ কর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে। মত্ত অবস্থায় মহিলা পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে দুর্বব্য়বহার করা হয়েছে। বারাসাত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) স্পর্শ নীলাঙ্গী বলেন, "কলোনীর মোড় জাতীয় সড়কের ওপরে পরে। রাতে ওখান থেকে পণ্য়বাহী গাড়ি যায়। সেটা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। আমার পুলিশ গ্রুপ অনেকবার, রাত ১টা থেকে, অনেকবার অনুরোধ করা হয়েছে, ট্রাফিক বিঘ্নিত হচ্ছে। আপনারা সাইডে করুন। একদমই সহযোগিতা করেনি। তারা পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্য়বহার করা শুরু করে। কয়েকজন পিছন থেকে পুলিশকে হেনস্থা করতে আসে। লেডি পুলিশ ছিল, তাঁর সঙ্গে অভব্য় আচরণ করেছে। মত্ত অবস্থায় ছিলেন।'' এদিন, বারাসাত আদালতে তোলা হলে, ধৃত ১৮ জনকেই জামিনের নির্দেশ দেন বিচারক।