জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : খারাপ আবহাওয়ার সাবধানবাণী ছিলই। নিম্নচাপ, ঝোড়ো হাওয়ার আভাস পেয়ে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে সকাল থেকেই, তারই মধ্যে এল এই ভয়াবহ খবর। বঙ্গোপসাগরে ভয়াবহ ট্রলার ডুবির খবর পাওয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ ১৮ মৎস্যজীবী ।
দুর্যোগের পূর্বাভাস পেয়ে ফেরার সময় বিপত্তি
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কথা শুক্রবার। দুর্যোগের পূর্বাভাস পেয়ে ফেরার সময় বিপত্তি ঘটে। কেঁদো দ্বীপের কাছে চড়ায় ধাক্কা মেরে উল্টে যায় ট্রলার । মৎস্যজীবীদের খোঁজে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে উপকূলরক্ষী বাহিনীর । জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের আবহাওয়া খারাপের সতর্কতা পেয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ফেরার চেষ্টা করে ট্রলারটি। তখনই ঘটে এই বিপদ।
আবহাওয়া দফতরের নির্দেশ অনুসারে, শুক্রবার সকাল থেকে সুন্দরবনের ( Sundarban ) বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো হওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল থেকে ঝড়খালি কোস্টাল থানার উদ্যোগে মৎসজীবী থেকে শুরু করে নদীর উপকূলবর্তী মানুষজনকে সাবধান করতে মাইকে ঘোষণা করছে পুলিশ। ঝোড়ো হাওয়া বইছে দিঘা-তাজপুর-মন্দারমণিতেও।
নিম্নচাপ এখন কোন পর্যায়ে
অতি গভীর নিম্নচাপ এরপর ওড়িশার বালেশ্বর ও বাংলার সাগর দ্বীপের মধ্যে দিয়ে আজ সন্ধেয় প্রবেশ করবে স্থলভাগে। তারপর ক্রমশ উত্তর ওড়িশা, বাংলা ও ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে ছত্তীসগঢ়ের দিকে এগোবে। এর প্রভাবে আজ ও আগামী ২৪ ঘণ্টা গোটা দক্ষিণবঙ্গেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। ভারী বৃষ্টি হবে উপকূলের জেলা, সংলগ্ন জেলা ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে।
গত জুন মাসেও মাছ ধরতে গিয়ে দুটি ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায় একটি ট্রলার। নিখোঁজ হয়ে যান এক মত্স্যজীবী। গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে এই কেঁদো দ্বীপ থেকে বেশ কিছুটা দূরে বঙ্গোপসাগরে। মত্স্যজীবী সংগঠন সূত্রে খবর, রাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এফবি সত্যনারায়ণ ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে এফবি শ্রীকৃষ্ণের। এরপরই এফবি সত্যনারায়ণ ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা ১৯ জন মত্স্যজীবীকে উদ্ধার করে অন্য ট্রলারে থাকা মত্স্যজীবীরা। কালীপদ দাস নামে এক মত্স্যজীবী তখন নিখোঁজ হয়ে যান।
এবার এই গভীর নিম্নচাপ পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার ৬ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার খুব সম্ভাবনা রয়েছে। ১৯ ই আগস্ট সন্ধের দিকে বালাসোর এবং সাগর দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওডিশা উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ল্যান্ডফলের পরে এটি উত্তর ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড জুড়ে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে উত্তর ছত্তিশগড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকবে এবং ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে।