রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে উলটপুরাণ! ভোটের আগেই গ্রামপঞ্চায়েত হাতছাড়া হল তৃণমূলের (TMC)! আস্থা ভোটে জিতে বোর্ড গঠন করল সিপিএম-কংগ্রেস (Left-Congress alliance)! গ্রামীণ রাজনীতিতে ক্ষমতার হাত বদলের ট্রেন্ডে উলটপুরাণ মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) লালগোলার (Lalgola) দেওয়ানসরাই গ্রামপঞ্চায়েতে।


পঞ্চায়েতে উলটপুরাণ


বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে উলটপুরাণ মুর্শিদাবাদের লালগোলায়! দেওয়ানসরাই গ্রামপঞ্চায়েতে তৃণমূলকে সরিয়ে বোর্ডের দখল নিল কংগ্রেস-সিপিএম জোট। উল্লাসে মাতল বাম-কংগ্রেসের সমর্থকেরা। ২৪ আসনের গ্রাম পঞ্চায়েতে আস্থা ভোটে প্রধান পদে বাম-কংগ্রেসের জোটপ্রার্থী সন্ধ্যারানি দাসের পক্ষে মোট ১৩টি ভোট পড়ে। আর তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান পদপ্রার্থী মহম্মদ সুজন হোসেন পেয়েছেন ১১টি ভোট। আর তাতেই বদলে গেল ক্ষমতার সমীকরণ।  


২০১৮ সাল থেকে যে দেওয়ানসরাই গ্রামপঞ্চায়েতে তৃণমূলের আধিপত্য ছিল, তা এখন কংগ্রেস-সিপিএম জোটের দখলে! লালগোলার কংগ্রেস ব্লক সভাপতি যদুরাম ঘোষ বলেন, 'তৃণমূলের পতন শুরু হল এই লালগোলা থেকে। একের পর এক পঞ্চায়েত দখল করবে বিরোধীরা, ২০১৮-তে আমাদের থেকে জোর করে দখল করেছিল।'


লালগোলা দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সিপিএম সদস্য মহম্মদ ইসমাইল হকের কথায়, 'আমাদের জোর করে হারানো হয়েছিল। ২০১৮ সালের পর থেকে লড়াই করছিলাম, এই জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে।'


 



পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের হাতছাড়া হল গ্রামপঞ্চায়েত। লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলি বলেন, '২০১৮ সালে প্রধান নির্বাচনের সময়, বাম-কংগ্রেস জোট সম্পূর্ণ না হওয়ায় তৃণমূল প্রধান নির্বাচন করেন। এতে কোনও প্রভাব পড়বে না, ২০২৩ সালে আবার আমরা মানুষের ভোটে জয়লাভ করে পঞ্চায়েত দখল করব।'


আরও পড়ুন: S24 Parganas: মিনাখাঁ থেকে উদ্ধার ২৫টি বিদেশি পাখি, পাচার-যোগের অভিযোগে ধৃত ১


গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২৪ সদস্যের দেওয়ানসরাই গ্রামপঞ্চায়েতে তৃণমূল ১০টি আসনে জেতে। কংগ্রেস ৯টি এবং সিপিএম ৫টি আসন পেয়েছিল। অভিযোগ, সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্ত্বেও সিপিএমের ৫ সদস্যকে ভাঙিয়ে বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল। ৪ বছর পর গত জুলাইয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনে বাম-কংগ্রেস। ২৫ জুলাই অপসারিত হন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল কাদির। আস্থা ভোটে নতুন প্রধান নির্বাচিত হলেন বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী। 


এদিন সকাল থেকেই আস্থা ভোটকে কেন্দ্র করে অঞ্চলে টানটান উত্তেজনা ছিল। সকাল থেকেই বহাল ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। আস্থা ভোটের পর নতুন প্রধানের নাম ঘোষণার পর দলীয় পতাকা হাতে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন বাম ও কংগ্রেস কর্মী সমর্থকেরা।