সমীরণ পাল, সৌমিত্র রায়, উত্তর ২৪ পরগনা: প্রায় ২২ ঘণ্টা পার, বেলঘরিয়ায় শ্যুটআউটে এখনও গ্রেফতারি শূন্য। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন INTTUC নেতা, মাঝে পড়ে আক্রান্ত হন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা। আর জি কর মেডিক্যালে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা। সূত্র মারফৎ খবর, 'এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিকাশ-ইন্দোল বিবাদ', বেলঘরিয়ায় শ্যুটআউটের নেপথ্যে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব পুলিশের।
চা খেতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হবে কখনও দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি বেলঘরিয়ার উত্তর বাসুদেবপুরে শ্যুটআউটকাণ্ডে জখম সন্তু দাস। শনিবারের ঘটনায় এখনও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারছে না তার পরিবার। প্রশ্ন উঠছে, সামান্য চায়ের দোকানে গিয়ে যদি গুলিবিদ্ধ হতে হয়, তাহলে আর সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? গুলিবিদ্ধ যুবক সন্তু দাস বলেন, 'চা টা খাওয়া হয়ে গিয়েছে, একটা ফায়ারের আওয়াজ পেয়েছি, তখন দৌড়-ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছি।
জখম সন্তু দাসের মা বলেন, কী বলব আমার কপালটা ভাল তাই আমি ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।' গিয়েছিলেন চা খেতে! ফিরতে হল গুলি খেয়ে! বেলঘরিয়ার উত্তর বাসুদেবপুরের ঘটনায় এখনও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারছেন না, জখম সন্তু দাসের পরিবার। চা খেতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হবে কখনও দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি।
সন্তু দাসের বান্ধবী রিয়া কর্মকার বলেন, 'অবশ্যই লাগতে তো পারত। ওখানে একটা বাচ্চা ছিল। আমাদের সামনে চা নিচ্ছিল। বাচ্চাটারও তো লাগতে পারত আজকে। কী বলব মানে এখন রাস্তায় বেরনো মানেই হয় নিজেদের জীবনটা দিতে হবে আর কিছুই না। এর যা হল মানে আমি মানে এটা তো চোখ বন্ধ করলেই মানে আমি ভাবছি যে কী হয়ে পারত না, কী হয়ে যেতে পারত।' শনিবার রাতে বেলঘরিয়ার উত্তর বাসুদেবপুরে, আগরপাড়ার টেক্সম্যাকো কারখানার INTTUC-র সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সিং-কে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ হন পানিহাটি থেকে ডাক্তার দেখাতে আসা সন্তু দাস নামে এক যুবকও।
এবিপি আনন্দ: কী হয়েছিল, কাদের সঙ্গে গেছিলেন? কী হয়েছিল?
গুলিবিদ্ধ যুবক সন্তু দাস : আমি গিয়েছিলাম, একটা বউদি গিয়েছিল, ওকে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম...তো ডাক্তার দেখানোর পর ওঁ বলল একটু চা খাব। তো ওই চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে আমরা চা খাচ্ছিলাম। আবার ফায়ার করছে, তখন আমরা দৌড়-ঝাঁপ করতে করতে আমি এই ফুটে চলে এলাম। তারপরে, আমি দেখছি পিঠে জ্বালা করছে। হাত দিয়ে দেখছি রক্ত বেরোচ্ছে।
এবিপি আনন্দ: আপনি তো কিছু জানতেন না, সেখানে ডাক্তারের চেম্বারে গিয়েছিলেন, এরকম একটা ঘটনার সম্মুখীন হলেন,কতটা আতঙ্কে আছেন?
গুলিবিদ্ধ যুবক সন্তু দাস : গুলিবিদ্ধ যুবক নিশ্চয়ই প্রচুর আতঙ্কে আছি। এখন সাধারণ মানুষ আমি। চা খেতে যদি এরকম গুলিবিদ্ধ হই তাহলে কী করব বলুন, সাধারণ মানুষ হিসেবে।
আরও পড়ুন, দ্বন্দ্ব ভুলে ফের এক ফ্রেমে, ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন রাজীব, দাবি কল্যাণের
ঘটনায় তীব্র আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খোদ শাসকদলের এক কর্মীর গলাতেও শোনা গেল আতঙ্কের সুর। কামারহাটির তৃণমূল কর্মী ও বাসিন্দা প্রশান্ত দে বলেন, এটা কখনও আশা করিনি। এই ভিড়-ভার অঞ্চলে, এইরকম একটা বাজারি এলাকার মোড়ে এই ধরনের যদি গুলি চলে, আগামী দিনে মানুষ তো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। দুষ্কৃতীদের ভয়-ডর শিকেয় উঠেছে। দিকে দিকে অস্ত্রের আস্ফালন। ঝুটছে গুলি, জখম হচ্ছেন নেতা থেকে সাধারণ মানুষ। কখনও কখনও প্রাণও পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। কোথায় আইনশৃঙ্খলা? কিন্তু, সামান্য চায়ের দোকানেও গিয়েও যদি গুলিবিদ্ধ হতে হয়, তাহলে আর সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?