কলকাতা: ইতিহাস, ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে বেলুড় মঠে কুমারী পুজো। দেবীকে মৃন্ময়ী রূপে আরাধনার পাশাপাশি কুমারীর মধ্যে মাতৃরূপ দর্শন, এই প্রথা মেনেই প্রতিবারের মতো এবারও বেলুড় মঠে কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। ১৯০১ সালে মা সারদার উপস্থিতিতে ৯ জন কুমারীকে পুজো করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সেই থেকেই চলে আসছে এই প্রথা। কুমারী পুজো দেখতে সকাল থেকেই বেলুড় মঠে রয়েছে ভিড় জমিয়েছেন ভক্তরা।
দুর্গা পুজোর ( Durga Puja ) অন্যতম অঙ্গ হল কুমারী পুজো ( Kumari Puja ) । সারা দেশে শুধু বাংলা নয়, বিভিন্ন রাজ্যেই রয়েছে এই পুজোর প্রচলন। নাবালিকা শিশুকন্যাকে পুজো করে নারীশক্তিকেই সম্মান জানানো হয় এই পুজোর মাধ্যমে। কুমারীর পায়ে পদ্ম অর্পণ করে আসলে মা দুর্গাকেও বন্দনা করা হয়ে। তন্ত্রমতে কুমারীকে সাক্ষাৎ যোগিনী রূপে উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন পুরাণে কুমারী পুজোর গুরুত্বের উল্লেখ রয়েছে।
দেবী চণ্ডিকা কুমারী রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবতাদের সামনে। সেই কন্যাকেই পুজো করার রীতি রয়েছে। বেলুড় মঠে যখন প্রথম দুর্গাপুজো শুরু হয় তখন শ্রী শ্রী সারদা মায়ের নামেই সংকল্প করা হয়েছিল। স্বামীজীর ইচ্ছা অনুসারেই মায়ের নামেই পুজো হয়।
স্বামীজির শিষ্য গৌরী-মা সব কুমারীদের "এয়োরানী" পুজো করেন। তবে বেলুড় মঠে কুমারী পুজো হয় অষ্টমীর দিনেই। বেনারসি শাড়ি পরিয়ে কুমারীকে মা দুর্গা জ্ঞানে পুজো করা হয়। এখানে বয়স অনুযায়ী কুমারীদের নামকরণও হয়। স্বামী বিবেকানন্দ সারদা মায়ের উপস্থিতিতে ৯ জন বালিকাকে কুমারী রূপে পুজো করেছিলেন।
আরও পড়ুন, বেলুড় মঠে অষ্টমীতে ষোড়শপচারে দেবী বন্দনা, ছবিতে দেখুন সেই মুহূর্ত
জানা যায়, স্বামী বিবেকানন্দ নিজে কুমারীদের পায়ে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন এবং পুজো শেষে তাদের প্রণামীও দেন। স্বামীজীর পুজো পদ্ধতি অনুসরণ করে আজও একইভাবে সমান রীতিতে সেখানে কুমারী পুজো চলছে। শ্রী শ্রী মায়ের দেহত্যাগের এত বছর পরেও সেই একই ধারায় বেলুড় মঠে পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে.
বয়স অনুসারে কুমারীদের নামকরণ করা হয়। এবারে পূজিতা কুমারীদের নামকরণ করা হয় "উমা"। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যে তিন শক্তির বলে ক্রমাগত সৃষ্টি ,স্থিতি ও লয় হচ্ছে সেই তিন শক্তি আদতে আকারে কুমারীর মধ্যে থাকে। এই কারণে কুমারীতে দেবী ভাব কল্পনা করে তাকে পূজো করা হয়। কুমারী তিনি হন তাকে দেবী দুর্গার প্রতিভূ বলা হয়।