রুমা পাল, কলকাতা : বালেশ্বরে করমণ্ডল-বিপর্যয়ের পর, আজ আবার ওড়িশায় যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।  বিপর্যয়ের পরদিনই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গিয়েছিলেন ওড়িশা ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীরাও। এবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যপাল।


বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামের গায়েন পরিবারের তিন ভাই হারান, নিশিকান্ত ও দিবাকর ধান রোয়ার কাজে অন্ধ্রপ্রদেশ যাচ্ছিলেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনজনেরই মৃত্যু হয়। পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর, মঙ্গলবার ছড়ানেখালি গ্রামে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এই গ্রামের আরও ২ জনের। সকলের পরিবারের সঙ্গেই কথা বলেন রাজ্যপাল। 


বাসন্তীর ছড়ানেখালি গ্রামে  রবিবার এসে পৌঁছায় ৫ জনের মৃতদেহ। এঁদের মধ্যে ছিল তিন ভাই হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন ও দিবাকর গায়েনের দেহ। ছিল বিকাশ হালদার ও সঞ্জয় হালদারের মৃতদেহও। বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস বিপর্যয়ে একই গ্রামের এই ৫ জনের মৃত্যু হয়। ধান রোয়ার কাজে অন্ধ্রপ্রদেশে যাচ্ছিলেন এই পরিযায়ী শ্রমিকরা। ছড়ানেখালি গ্রামে স্বজনহারাদের হাহাকারের মাঝেই মঙ্গলবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যপাল।     তাঁকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের মানুষ । শোকে পাথর গোটা গ্রামই। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই সময় ধান রোয়ার কাছে অন্ধ্রপ্রদেশ যান অনেকে। সেই রোজগারের টাাকাায় চলে সংসারগুলো। এক মুহূর্তে ঘটে যাওয়া এই মহা-বিপর্যয় এতগুলো পরিবারের ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করে দিল।      


এছাড়াও  বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এই জেলার ক্যানিংয়ের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সুখসাগর গ্রামের সামসুদ্দিন সর্দারের। নিখোঁজ ছিলেন ওই পরিবারের আরও দুই সদস্য। একই পরিবারের ৩ জন ধান রোয়ার কাজে করমণ্ডলে চেপে অন্ধ্রপ্রদেশে যাচ্ছিলেন।  করমণ্ডল বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে গোসাবার সাতজেলিয়ার আনন্দপুর গ্রামের সনৎ কর্মকারের। ধান রোয়ার কাজে দুই স্ত্রী ও মামাকে নিয়ে অন্ধ্রে যাচ্ছিলেন সনৎ। বাকিরা প্রাণে বাঁচলেও, ট্রেন দুর্ঘটনায় বছর বত্রিশের সনতের মৃত্যু হয়।                                  


অন্যদিকে মঙ্গলবার ফের ওড়িশায় যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কটক ও ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে ভর্তি এ রাজ্যের আহতদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। প্রথমে কটকে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ভুবনেশ্বর এইমসে গিয়ে দেখা করবেন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে। মৃতদেহ রাজ্যে আনা, আহতদের ফেরানো এবং নিখোঁজদের অনুসন্ধান, গোটা প্রক্রিয়ার তদারকির জন্য তিনদিনের পাহাড় সফর বাতিল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।