মুর্শিদাবাদ: বাংলার নববর্ষেই নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) সিবিআইয়ের ম্যারাথন অভিযান (CBI Raid)। বড়ঞায় ৩০ ঘণ্টা ধরে তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে অভিযান চালায় সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, বিধায়কের পুকুর লাগোয়া জঙ্গলে নিয়োগ দুর্নীতির নথি ভর্তি ৫টি ব্যাগের হদিশ মিলেছে।


বড়ঞায় জোড়া মোবাইলের খোঁজে বিধায়কের পুকুরে চিরুণি তল্লাশি চালায় সিবিআই। বিধায়কের মোবাইল ফোনেই কি লুকিয়ে নিয়োগ দুর্নীতির খনি? প্রশ্ন উঠতেই বাড়ছে সন্দেহ। বীরভূম-কলকাতায় তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতির বাড়ি-আশ্রমেও চালানো হয় তল্লাশি। শিয়ালদা, নলহাটিতে বিভাস অধিকারীর বাড়ি-ফ্ল্যাট-আশ্রম-কলেজেও চলেছে অভিযান। ভূপতিনগরে গোপাল দলপতির গ্রামের বাড়িতে চলে সিবিআই তল্লাশি। হরিদেবপুরে গোপাল দলপতির স্ত্রী হৈমন্তীর ফ্ল্যাটেও এদিন চলে সিবিআই অভিযান।  


একদিন পার। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার আন্দির বাড়িতে নজরবন্দি তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। আজ ভোর সোয়া ৪টে নাগাদ সিবিআইয়ের আরও একটি দল পৌঁছয় তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে। সিবিআই সূত্রে খবর, গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন বিকেল ৫টা নাগাদ নিজের দুটি মোবাইল ফোন বাড়ির পুকুরে ফেলে দেন জীবনকৃষ্ণ। শ্যালো পাম্প এনে রাত সাড়ে ১০টা থেকে পুকুর ছেঁচে জোড়া ফোনের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। সকালে আরও দুটি পাম্প এনে জল তোলার কাজ চলছে। সকাল সোয়া  বিধায়ককে নিয়ে গতকাল তাঁর বাড়ির আমবাগানেও তল্লাশি চালান সিবিআই আধিকারিকরা। মোবাইলের হদিশ পেতে সকাল সোয়া ৮টায় আনা হয় কমপ্যাক্ট স্ক্যান ডিভাইস। সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ পুকুরে নেমে তল্লাশি শুরু করেন পাম্প কর্মীরা। এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর বিধায়কের বাড়ি থেকে নিয়োগ দুর্নীতি ও জমি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি মিলেছে। 


সিবিআইয়ের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বিভিন্ন জনের মুখে উঠে এসেছে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার নাম। সেই সূত্রে গতকাল বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ দুটি গাড়িতে বিধায়কের আন্দির বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআইয়ের ৬ জনের দল, সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী। একইসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জে বিধায়কের শ্বশুরবাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। শ্বশুরবাড়িতে তল্লাশি অভিযান দুপুর আড়াইটে নাগাদ শেষ হলেও, বিধায়কের বাড়িতে রাতভর ম্যারাথন তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শুধু টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া নয়, চাকরিপ্রার্থীদের নামও সুপারিশ করতেন তিনি। বিধায়কের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে। 


অপরদিকে, পয়লাবৈশাখের (Pohela Baishakh) আনন্দে মেতেছে যখন গোটা বাংলা, ঠিক তখনই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে হৈমন্তীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাল সিবিআই (CBI)। গোপাল দলপতির ভূপতিনগরের বাড়ির পরে এদিন, গোপালের প্রাক্তন স্ত্রী হৈমন্তীর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাল সিবিআই। গোপালের প্রাক্তন স্ত্রী হৈমন্তীর ফ্ল্যাট রয়েছে হরিদেবপুরে। আর নববর্ষের দিনে সেখানেই তল্লাশি অভিযান সিবিআই-র। ২৬ ঘণ্টা ধরে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে সিবিআই অভিযান চালানো হয়েছে। বীরভূম-কলকাতায় তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতির বাড়ি-আশ্রমে তল্লাশি চলেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে গোপাল দলপতির গ্রামের বাড়িতেও সিবিআইয়ের অভিযান। বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতেও ম্যারাথন তল্লাশি সিবিআইয়ের। 


আরও পড়ুন, বাংলার নববর্ষেই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে হৈমন্তীর ফ্ল্যাটে CBI তল্লাশি 


প্রসঙ্গত, রাজ্যের গত কয়েকমাসে ইতিমধ্য়েই শ্রীঘরে গিয়েছেন শাসকদলের হেভিওয়েটরা। জিজ্ঞাসাবাদে নাম উঠে এসেছে একাধিক নতুন চরিত্রের। 'মাথাকে ধরা হোক', ধরা হোক যখন দাবি তুলছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় শীর্ষ নের্তৃত্ব, ঠিক তখনই বাম আমলে নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনেছেন তৃণমূল নেতারা।