আশাবুল হোসেন, শিবাশিস মৌলিক ও রুমা পাল, কলকাতা: নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে চক্রান্ত করে, সাইলেন্ট রিগিং থেকে চুপিচুপি ভোটে কারচুপির বিস্ফোরক অভিযোগ তুলল তৃণমূল। তাঁদের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকার 'হার্ড কপি' আর কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করা তালিকার মধ্যে ফারাক রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, কুণাল ঘোষের অভিযোগ জেলাশাসকদের দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। SIR নিয়ে বাগযুদ্ধের মধ্য়েই এবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে, বিজেপির সঙ্গে চক্রান্ত করে সাইলেন্ট রিগিং...থেকে চুপিচুপি ভোটে কারচুপির মতো বিস্ফোরক অভিযোগ তুলল তৃণমূল। SIR-এর ক্ষেত্রে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, বা মা-বাবার নাম ছিল, তাঁদের আর নতুন করে কোনও নথি জমা দিতে হবে না। আর, এখানেই তৃণমূলের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকার 'হার্ড কপি' আর কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করা তালিকার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ইতিমধ্যেই বিপুল সংখ্যক ভোটারের নাম মুছে দেওয়া শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আমরা যেটা সাইলেন্ট ইনভিজিবল রিগিং বলছি, অর্থাৎ চুপিচুপি কারচুপি। কীভাবে শুরু হয়েছে? একাধিক এলাকা থেকে অভিযোগ আসছে, ২০০২-এর ভোটার লিস্টে নাম ছিল, কিন্তু এখন ২০০২-এর ভোটার লিস্ট বলে যেটা নির্বাচন কমিশন আপলোড করছে, তাতে আচমকা নাম অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। 

Continues below advertisement

 তৃণমূলের দাবি, কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার বা উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক বুথে এভাবেই পরিকল্পিতভাবে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক  কুণাল ঘোষ বলেন, নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্র কোচবিহার, বুথ নম্বর ২-তে দেখা যাচ্ছে, ২০০২-এর যে ভোটার লিস্ট, তাতে ৭১৭টি নাম ছিল, তার কিন্তু হার্ড কপিতে সেই রেকর্ডটা রয়েছে।

কিন্তু, এখন অনলাইন যেটা আপলোড করা হয়েছে, ওই একই বুথে সেখানে দেখা যাচ্ছে ১৪০, তাহলে ৭১৭ থেকে ১৪০ হল কী করে? বুথ নম্বর ১৬০, মাথাভাঙা এখানে ২০০২ সালে মোট ভোটার ছিল ৮৪৬, ৪১৭ নম্বর যে মানুষটি ছিল, সেখান থেকে ৮৪১ নম্বর যিনি রয়েছেন সিরিয়াল নম্বর, এদের কোনও হদিশ নেই। উত্তর ২৪ পরগনার অশোনগরে, এখানে বুথ নম্বর ১৫৯, এখন দেখাচ্ছে কোনও ভোটার নেই। কী করে হতে পারে? ভোটাররা গেলেন কোথায়? অশোকনগর বিধানসভায় বুথ নম্বর ৬১ সেখানে, ৩৪৩ থেকে ৪১৪ এই এত জন ভোটার তাঁদের নাম নেই। 

Continues below advertisement

 SIR-এ কত নাম বাদ পড়তে পারে তা নিয়ে ইতিমধ্য়েই বিজেপি নেতারা নানা ভবিষ্য়দ্বাণী করেছেন। বিরোধী দলনেতা   শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সঠিক SIR হলে গত ১০-১২ বছরে বাংলাদেশের মুসলমান যেভাবে ঢুকেছে, কাঁটাতারের বেড়া না থাকার ফলে, তাতে ১ কোটিরও বেশি নাম বাদ যাওয়া উচিত। বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, SIR-এ কমপক্ষে ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ, যারা অবৈধ ভাবে ভোটার হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে আঁকড়ে ধরে বসে আছে, তারা কিন্তু বাদ যাবে। এই অবস্থায়, ফের একাবর পরিকল্পিত চক্রান্তের অভিযোগ তুলল তৃণমূল।

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক  কুণাল ঘোষ বলেন, এই যে মুখে বলছে না এতো লোক বাদ যাবে, এটা পরিকল্পিত চক্রান্ত, বিজেপির পার্টি অফিসে বসে চক্রান্ত হয়েছে। সেই চক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে, তাদের ওয়েবসাইটে উঠছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, কুণাল ঘোষের অভিযোগ জেলাশাসকদের দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন।