প্রকাশ সিনহা, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, শিবাশিস মৌলিক,কলকাতা: বহুতলে বুথ করার কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় । এরই মধ্য়ে এবার  বহুতলে বুথ করার কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন সুজাপুরের তৃণমূল বিধায়ক। একেবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমিশনকে দেওয়া কড়া চিঠির উল্টো অবস্থানে দাঁডিয়ে বক্তব্য রাখলেন মহম্মদ আব্দুল গনি। পরিষ্কার বললেন, বহুতলগুলিতে কমিশন বুথ করলে নিঃসন্দেহে সুবিধাজনক হবে। 

Continues below advertisement

আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রী থেকে বিরোধী দলনেতা, কোন কোন বিধায়কের কেন্দ্র থেকে কত নাম পড়তে পারে বাদের তালিকায় ?

Continues below advertisement

বহুতল আবাসনগুলিতে ভোটের বুথ তৈরির, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মুখ্য় নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। কিন্তু তাঁরই দলের বিধায়ক এবং কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মহম্মদ আবদুল গণি, বহুতলে ভোটকেন্দ্র তৈরির কমিশনের ভাবনাকে সমর্থন করছেন ! ২৪ শে নভেম্বর, জ্ঞানেশ কুমারকে দেওয়া এই চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল....এই প্রস্তাব (বহুতলে ভোটকেন্দ্র) ভীষণভাবে সমস্যার। কেন এই ধরনের চিন্তাভাবনা করা হল? এটা কি কোনও রাজনৈতিক দলের চাপে পড়ে তাদের দলীয় স্বার্থকে এগিয়ে দিতে করা হল? কেন কেন কেন?কিন্তু তাঁরই দলের বিধায়কের এ নিয়ে সম্পূর্ণ উল্টো মত।

 কলকাতা হাইকোর্ট তৃণমূল বিধায়ক ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি  মহম্মদ আব্দুল গনি বলেন, ওদেরকে আসতে হবে না। যারা ভোট দিত না, তারাও হয়তো ভোট দেবে। পোলিং সেন্টারে আমাকে যেতে হবে, বয়স্ক, বৃদ্ধ, হাঁটতে পারি না ভাল করে, চলতে পারি না, তাদের পক্ষে সুবিধা হবে না? বহুতলের ওখানে যদি পোলিং সেন্টার হয়, তাহলে খারাপ কী হবে! বয়স্কদের সুবিধা হবে। বহুতলে বুথ তৈরির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে আরও একটি যুক্তিও দিয়েছেন তিনি।  

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, এবারই প্রথম রাজ্যের বহুতলগুলিতে ভোটকেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এনিয়ে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দেখা যায় শুধুমাত্র দক্ষিণ কলকাতার ২টি বহুতল ছাড়়া রাজ্যের আর কোনও জায়গার বহুতলের নাম রিপোর্টে নেই। কিন্তু কলকাতার একাধিক আবাসনের বাসিন্দারা বহুতলে বুথ নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। আরবানা আবাসিক বিকাশ সিং বলেন, বাইরে অনেকসময় ভোটে গন্ডগোল হয়, এটা হলে হবে না। ২-৩ ঘণ্টা লাইন দিতে হবে না। অভিদীপ্তা আবাসিক তিথি সামন্ত বলেন, ভিতরে বুথ হলে অনেক সুবিধা হবে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে সুবিধা। ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়বে। বহুতলগুলিতে ভোটের বুথ করা যায় কি না, তা নিয়ে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের নতুন করে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বলা হল, ২৫০টি বাড়ি কিংবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন এমন বহুতল, হাউসিং সোসাইটি, কলোনি, বস্তি এলাকায় সমীক্ষা করে প্রস্তাবিত ভোটকেন্দ্রের তালিকা জমা দিতে হবে। এই কাজ শেষ করতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। অভিষিক্তা  আবাসিক  নবেন্দু বিশ্বাস বলেন, হলে সুবিধাই হবে। সবাই এক জায়গায় ভোট দিতে পারবে। বাইরে যেতে হবে না। আরবানা  আবাসিক  সুচন্দ্রা ভানিয়া বলেন, হাইরাইজে যারা থাকেন তাদের বাইরে থেকে একটু অ্যালুফ রাখতে চান নিজেদেরকে। তাই অনেকে ভোট দিতে যেতে চান না। এটা হলে যারা বাইরে যান না, তাঁরাও যাবেন।' বহুতলে বুথ নিয়ে কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হয় তা জানা যাবে আরও কিছুদিন পর। গোটা রাজ্যে বুথের সংখ্যার চূড়ান্ত তথ্য প্রকাশ হবে ৭ই ফেব্রুয়ারি।