আবির দত্ত, কলকাতা : 'খসড়া ভোটার তালিকায় বাদ যেতে চলেছে প্রায় ৫৮ লক্ষ নাম', এবিপি আনন্দের এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল রোল অবর্জাভার সুব্রত গুপ্ত। '৫৮ লক্ষ ছাড়াও ১ কোটি ৩৬ লক্ষের নামে এখনও অসঙ্গতি রয়েছে। এই ১ কোটি ৩৬ লক্ষের নাম খতিয়ে দেখতে হবে। ত্রুটি পরীক্ষা করে, শুনানি করে সব কিছু দেখতে হবে', খসড়া তালিকা প্রকাশের আগে জানিয়ে দিলেন সুব্রত গুপ্ত। 'সাধারণভাবে শহরাঞ্চলে নাম বাদের সংখ্যা বেশি, গ্রামে কম', ভবানীপুর, নন্দীগ্রাম-বিতর্কে মন্তব্য স্পেশাল রোল অবর্জাভারের।
নির্বাচন কমিশন সূত্রেও খবর, প্রায় ৫৮ লক্ষ নাম বাদ যেতে চলেছে খসড়া ভোটার তালিকায়। এই প্রসঙ্গে স্পেশ্যাল অবজার্ভার সুব্রত গুপ্ত বলেছেন, 'কাল নির্বাচন কমিশনের থেকে নির্দেশ পাওয়ার পর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। এই তালিকায় ৫৮ লক্ষ ASDD বাদ যাবেন। অ্যাবসেন্টি, শিফটেড, ডেড এবং ডুপ্লিকেট - এদের নাম বাদ যাবে। এই ৫৮ লক্ষ নাম খসড়া ভোটার তালিকায় থাকবে না। বাকি যাঁরা ২০২৫- এর তালিকায় ছিলেন এবং যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম জমা দিয়েছেন, তাঁদের সকলের নাম থাকবে।'
এই ৫৮ লক্ষ নাম ছাড়াও প্রায় ১ কোটি ৩৬ লক্ষ নামে অসঙ্গতি (লজিকাল ডিসক্রিপেন্সি) রয়েছে। তবে এগুলো সবই যে ভুয়ো, তেমনটা বলেননি সুব্রত গুপ্ত। তাঁর কথায়, 'অনেক প্রযুক্তিগত ত্রুটি আছে। ডেটা এন্ট্রিতে ভুল রয়েছে। অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রে ভুল রয়েছে। আরও পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এঁদের মধ্যে কিছু লোক আসবেন, কিছুজন আসবেন না।' মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নাম বাদ গেলে বড়সড় আন্দোলনে নামবেন। এই নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে চাপ নিচ্ছেন না স্পেশাল রোল অবজার্ভার সুব্রত গুপ্ত। তিনি বলছেন, 'নির্বাচন কমিশনও চাইছে, যোগ্য ভোটারদের যেন বাদ দেওয়া না হয়। যাঁরা যোগ্য নন, তাঁরা যেন তালিকায় না থাকেন।'
গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলে বাদ গিয়েছে বেশি নাম, এমনটাই জানিয়েছেন সুব্রত গুপ্ত। তিনি বলছেন, '২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে সাধারণভাবে গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে অনেক বেশি নাম বাদ দিয়েছে। গ্রামাঞ্চলের বুথগুলোয় কম নাম কাটা গেছে, শহরাঞ্চলে অনেক বেশি কাটা গেছে। শহরাঞ্চলের মানুষ তুলনায় বেশি সংখ্যায় স্থানান্তরিত হন কাজের জন্য, পড়াশোনার জন্য। মৃত ভোটারদের নামের আপডেট গ্রামের তুলনায় শহরে কম হয়। কারণ বিএলও-রা স্থানীয় ব্যক্তি হলেও, গ্রামের মানুষের যেভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে, শহরে সেভাবে থাকে না।'