সুদীপ চক্রবর্তী, বিজেন্দ্র সিংহ, উত্তর দিনাজপুর: ফের বাংলা ভাষায় কথা বলায় হেনস্থার অভিযোগ। হরিয়ানায় কাজে গিয়ে এমনই অভিযোগ তুললেন উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বাসিন্দা মিরাজ শরিফ। যুবকের বাবার দাবি, ছেলে রায়গঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণ কল্য়াণীকে ফোন করায় তিনি সাহায্য়ের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর এই ঘটনাতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণ কল্য়াণীর দেওয়া অডিওতে শোনা গিয়েছে, হরিয়ানায় আটকে থাকা যুবক মিরাজ শরিফ বলছেন, 'আমার নাম মীরাজ শরিফ। আমি গুরগাঁওয়ে ১৫ দিন হয়ে গেল এখানে এসে ফেঁসে গেছি। এখানে বাংলা বলা লোকগুলোকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।  পুলিশে ধরে নিয়ে যাচ্ছে স্য়র।'

ভাষা মানুষের পরিচয়। কিন্তু অভিযোগ, সেই ভাষার জন্য়ই এখন শিকার হতে হচ্ছে অত্য়াচারের! হরিয়ানায় কাজে গিয়ে এমনই অভিযোগ তুললেন উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বাসিন্দা মিরাজ শরিফ। তাঁর বাবার দাবি, দিন পনেরো আগে ছেলে হরিয়ানায় গিয়েছিল কাজের খোঁজে। সেখানে গিয়ে হকারির শুরু করে। এর মাঝেই ছেলে ফোনে জানায় সেখানে বাংলাভাষীদের পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকী বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য় কাজের জায়গায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মিরাজ। তাঁর বাবার দাবি, ভয়ে হরিয়ানাতেই নিজেকে গৃহবন্দি করে ফেলে ছেলে।

মিরাজ শরিফের বাবা মাসুদ করিম বলছেন, 'হকারির কাজ করে। মাল দিয়ে বেড়ায়। বাংলা কথা বললেই বলে বাংলাদেশি বলে। ওই জন্য় ভয়ে আতঙ্ক হয়ে আছি।  আমি আমার একটা ছেলে, ও যেন বাড়িতে চলে আসে। বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে না কী বলছে। ভয়ে... কাজে যাচ্ছে না। ওর সামনেই নিয়ে গেছে লোক তুলে। আমরা আতঙ্কে আছি।'

মিরাজের বাবার দাবি, বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জের তৃণমূলের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্য়াণীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন তাঁর ছেলে। এরপর বাড়িতে ফেরার জন্য় আর্থিক সাহায্য় করার অনুরোধ জানান তিনি। রায়গঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক কৃষ্ণ কল্য়াণী বলছেন, 'আমাকে উনি ফোন করে বললেন দাদা আমি বাড়িতে ফিরতে চাই। আমি ১৫ দিন ধরে আছি। লুকিয়ে রয়েছি। আমার কাছে টাকা পয়সা নেই। আপনি যদি সাহায্য় করতেন আমি ফিরে যেতে পারতাম। এই কথা শোনার পর আমি ওঁকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করলাম।' এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

রায়গঞ্জের তৃণমূলের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্য়াণী বলছেন, 'তার একটাই অপরাধ সে বাংলা ভাষা কথা বলে। আজকে যে হিসেবে, সংবিধানকে না মেনে বিজেপি RSS যৌথভাবে সংবিধান রাখার চেষ্টা করছেন। এটা আমি মনে করি গণতন্ত্রের হত্য়া হচ্ছে।' মিরাজের বাবার দাবি, ছেলে জানিয়েছেন টিকিট পেলেই ফিরবেন তিনি।