আবির দত্ত, বাচ্চু দাস ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা: ব্যাঙ্গালোরের ক্যাফেতে বিস্ফোরণে ২ সন্দেহভাজন জঙ্গির বাংলা থেকে গ্রেফতারির ঘটনায় চড়ছে রাজনীতির পারদ। সোমবার রাজ্যে এসে, এনিয়েই তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় তথ্য়সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। বললেন, অপরাধীদের আশ্রয়স্থল পশ্চিমবঙ্গ। কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ছেন, পাল্টা অনুরাগ ঠাকুরকে নিশানা করেছেন কুণাল ঘোষ। এদিকে সূত্রের দাবি, NIA-তদন্তকারীরা মনে করছেন, ২০২০ থেকে একের পর নেতা গ্রেফতার হওয়ার পর, নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতেই ব্যাঙ্গালোরের কাফেতে বিস্ফোরণ ঘটায় IS. 


বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় তথ্য়সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন,'জঙ্গিরা হামলা পশ্চিমবঙ্গে করুক বা বেঙ্গালুরুতে করুক, সুরক্ষা তারা কোথায় পায়? পশ্চিমবঙ্গে।' পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'এতগুলো রাজ্য পেরিয়ে এল, তো তখন NIA, IB, সেন্ট্রাল এজেন্সি কী করছিল? ধরেনি কেন? কে বারণ করেছিল? অনুরাগ ঠাকুর কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ছেন। বিস্ফোরণ হয়েছিল ব্যাঙ্গালোরের ক্যাফেতে।আর, মাস্টারমাইন্ড ২ সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে এরাজ্য়ের দিঘা থেকে।'


লোকসভা ভোটের মুখে এই ঘটনায়, বঙ্গ-রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গেছে। কারণ,১ মাস ধরে,কলকাতা থেকে দার্জিলিং,পুরুলিয়া থেকে দিঘায় একের পর এক আস্তানা বদল করে ঘুরে বেড়িয়েছে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। সোমবার রাজ্যে এসে, এনিয়েই তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় তথ্য়সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। 


বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় তথ্য়সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন,সব ধরনের ওই লোক যারা রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি, যারা মহিলাদের উপর অত্য়াচারও করে, দুর্নীতিও করে, এদের সবাই কোথায় আশ্রয় পায়? তো মমতা ব্যানার্জির নাকের ডগায় পশ্চিমবঙ্গে। এই সুরক্ষা পশ্চিমবঙ্গে কেন মেলে? দুর্নীতির নতুন রেকর্ড পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে। এদের মন্ত্রীদের ঘরে কোটি কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মহিলাদের সঙ্গে অপরাধে তৃণমূলের নেতাদের নাম এসেছে। এদের সুরক্ষা দেওয়ায় এদের সরকারের নাম এসেছে। আতঙ্কবাদীরা পশ্চিমবঙ্গে করুক বা বেঙ্গালুরুতে করুক, সুরক্ষা তারা কোথায় পায়? তো পশ্চিমবঙ্গে। 


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন,বিস্ফোরণটা তো হয়েছে বেঙ্গালুরুতে, কর্ণাটকে। তার আধার কার্ডে নাম ছিল হচ্ছে তামিলনাড়ুর। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ কোথায়? বেঙ্গালুরুর পাশের বাড়ি তো পশ্চিমবঙ্গ নয়। যেগুলো তাদের দায়িত্ব, তাদের এলাকা, তাদের এজেন্সির দেখার কথা, সেই জায়গা থেকে যখন ধরা পড়ছে, তখন দেখা যাচ্ছে তাহলে তারাই সুরক্ষা দিয়েছেন। অথবা তাদের এলাকা থেকে সেফ প্যাসেজ করে দিচ্ছেন অবিজেপি রাজ্যে গিয়ে কিছুদিনের জন্য লুকোবার জন্য। তারাই সেফ প্য়াসেজ করে দিয়েছেন। বাংলা অবধি এল কী করে?  


 আরও পড়ুন, ভোটের আগে মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের DIG-কে সরানোর নির্দেশ কমিশনের, মুখ্যমন্ত্রী বললেন..


এদিকে, এই বিস্ফোরণ নিয়ে NIA-র তদন্তেও বেশ কিছু তথ্য় উঠে এসেছে। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, দিঘা থেকে ধৃত, সন্দেহভাজন IS জঙ্গি আবদুল বাড়ি ছেড়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার কথা বলে। ধৃত আরেক জঙ্গি মুসাভিরা কম ক্ষমতার IED বিস্ফোরক তৈরি শিখেছিল সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে। কলকাতায় এসে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা পরিকল্পনামাফিক বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছে। যাতে সহজে তাদের লোকেশন ট্র্যাক না করা যায়। এদের নেতা আরাফাত আলি আফ্রিকার কেনিয়া থেকে ফেরার সময় দিল্লিতে গ্রেফতার হয়েছিল। ২০২০ থেকে IS জঙ্গি সংগঠনের একের পর এক মাথা গ্রেফতার হচ্ছিল। গোয়েন্দারা মনে করছেন, অস্তিত্ব জাহির করতেই ব্যাঙ্গালোরের কাফেতে বিস্ফোরণ ঘটায় এই জঙ্গিরা।