কলকাতা: ভবানীপুরকাণ্ডে (Bhawanipur) ব্যবসায়ী অশোক শাহ-র মোবাইল ফোন উদ্ধার। সূত্রের খবর, গতকাল রাতে ধর্মতলা (Dharamtala) এলাকায় একটি হোটেলের উল্টোদিকে ম্যানহোলের পাশে জঞ্জালের স্তূপ থেকে উদ্ধার হয় মোবাইল ফোনটি। কে বা কারা ওখানে মৃত ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোন ফেলে যায়, তার হদিশ পেতে এলাকার সিসি ক্যামেরার (CCTV) ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মোবাইল ফোন চালু থাকায় টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে সেটির হদিশ মেলে। ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ী দম্পতির ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে পুলিশ। সেখান থেকে নতুন কোনও তথ্য মেলে কিনা এখন সেদিকেই নজর তদন্তকারীদের। 


লুঠপাটে বাধা দেওয়ার জেরেই কি খুন হয়েছেন ভবানীপুরের শাহ দম্পতি? নাকি আততায়ীদের চিনে ফেলায় প্রাণ দিতে হয়েছে তাঁদের? বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও গয়না লুঠ হলেও, পুলিশের প্রশ্ন, আততায়ীরা এই ঘটনাকে লুঠের উদ্দেশে খুনের চেহারা দিয়ে, তদন্তকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছে না তো?


নিরাপত্তার দিক থেকে হাই-সিকিওরিটি জোন। দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম অভিজাত এলাকা। সেই হরিশ মুখার্জি রোডের ওপর, এই বাড়িতে, দিনেদুপুরে ঢুকে গুলি করে, কুপিয়ে খুন করা হয়েছে দম্পতিকে।


কিন্তু, কেন? খুনের উদ্দেশ্য কী? লুঠপাটে বাধা? আততায়ীদের চিনে ফেলা? প্রমাণ লোপাট? আততায়ীরা কি দম্পতির পূর্ব পরিচিত ছিল? নাকি অন্য কিছু? নিহত শাহ দম্পতির পরিবারের দাবি, বাড়ি থেকে বেশ কিছু জিনিসপত্র খোয়া গেছে! তদন্তকারীদের বক্তব্য, এই প্রেক্ষাপটে দু’টো সম্ভাবনা উঠে আসছে।


এক, লুঠপাটে বাধা দেওয়ার জেরে দম্পতিকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। দুই, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতে, পরিকল্পনামাফিক এই ঘটনাকে লুঠপাটের উদ্দেশে খুনের চেহারা হয়েছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, আততায়ীরা যে খুনের পরিকল্পনা নিয়ে এসেছিল, এটা কার্যত স্পষ্ট। নাহলে আগ্নেয়াস্ত্র এবং ধারাল অস্ত্র নিয়ে তারা আসত না। পুলিশ সূত্রে দাবি, যে দু’টো মোবাইল ফোন আততায়ীরা নিয়ে গেছে, তার মধ্যে নিহত রশ্মিতা শাহর মোবাইল ফোন সোমবার রাতে সুইচড অফ হয়ে গেলেও


অশোক শাহর মোবাইল ফোনটি মঙ্গলবার সকাল অবধি অন ছিল।  টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে দেখা যায় মোবাইল ফোনটি ধর্মতলা চত্বরে রয়েছে।  এরপরই পুলিশ মোবাইল ফোনের খোঁজ শুরু করে।  কিন্তু, এখানে প্রশ্ন উঠছে, আততায়ীরা কি তাহলে ধর্মতলা হয়ে কোথাও পালিয়েছে? নাকি চোখে ধুলো দিতে, তারা ইচ্ছে করে ধর্মতলা চত্বরে ফোন ফেলে গেছে? যাতে পুলিশের নজর ওই জায়গায় থাকে, আর তারা অন্য রাস্তা দিয়ে পালাতে পারে।
গ্রাফিক্স আউট


খুনের নেপথ্যে লুঠপাট ছাড়া অন্য কারণ কী থাকতে পারে, সেটাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।  এই তিনতলা বাড়ির একতলার পিছন দিকে যে অংশে শাহ দম্পতি থাকতেন, সেটি তাঁদের কেনা। 


প্রতিবেশীদের দাবি, সম্প্রতি নিজেদের অংশটি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন শাহ দম্পতি। কয়েকজন দালালও এ বাড়িতে আসা যাওয়া করছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য ১ লক্ষ টাকা অগ্রিমও নিয়েছিলেন তিনি। ব্যবসা ঠিকমতো না চলায় কয়েক বছর আগে মেহতা বিল্ডিংয়ে নিজেদের দোকানও বিক্রি করেছিলেন।