ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : নিউটাউনে নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় যখন পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন টোটো চালক, তখন জলপাইগুড়িতে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে আরেক টোটো চালককে। দুটি ঘটনাতেই টার্গেট স্কুল ছাত্রীরা। দু’জনেই অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, টোটোর মতো গণপরিবহণের অন্য়তম এই লাইফলাইনের সুরক্ষা নিয়েই যদি বারবার প্রশ্ন উঠে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষ যায় কোথায়! কীভাবে টোটো চালক কিশোরীকে বাড়ি পৌঁছে দেবে বলে অন্ধকার জায়গায় নিয়ে নিয়ে ঘৃণ্য কাজটি করে, তার গা শিউরে বর্ণনা দিয়েছে টোটোচালকের স্ত্রী নিজে। আর সেখান থেকেই পরিষ্কার এই টোটোচালকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যেহেতু কোথাও নথিবদ্ধ থাকে না, তাই তারা অপরাধ ঘটাচ্ছেও অবাধে। এই পরিস্থিতিতে টোটো চালকদের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করল বিধাননগর কমিশনারেট।
টোটো চালকের গ্রেফতারির পর টনক নড়ল পুলিশের
নিউটাউনে ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনে টোটো চালকের গ্রেফতারির পর টনক নড়ল পুলিশের। টোটো চালকদের জন্য জারি করা নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,
- রাস্তায় টোটো নামানোর আগে চালকদের নাম, ঠিকানা-সহ তথ্যপঞ্জি জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট থানায়।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। পুলিশের ছাড়পত্র অর্থাৎ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট মিললে তবেই চালানো যাবে টোটো। রেজিস্ট্রেশন না থাকায়, ব্যাঙের ছাতার মতো বেড়েছে টোটোর সংখ্যা। তার জেরে অপরাধ সংঘটিত হলে, তদন্তে সমস্যা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে। সেই কারণেই এবার টোটো চালকদের জন্য পুলিশি কড়াকড়ি। বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো থেকে রাতে বাসস্ট্যান্ড থেকে বাড়ি ফেরা, অনেক সময়ই টোটোই ভরসা। ছোট স্কুল পড়ুয়া থেকে বাড়ির বয়স্ক মানুষদেরও ভরসা টোটো। এভাবে যদি টোটো চালকদের নাম ঘৃণ্য অপরাধের অভিযোগের খাতায় উঠে আসে, তাহলে সাধারণ মানুষ ভরসা করবে কাদের। ক্রমশই বাড়ছে ভয়। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ ও নিউটাউনে অনেক রাস্তাই সন্ধের পর শুনশান হয়ে যায়। সেই রাস্তাগুলিতে টোটোয় যাতায়াত করতে হয় মহিলাদের। এই পরিস্থিতিতে বিধাননগর কমিশনারেটের সিদ্ধান্ত সমস্যা কিছুটা বাগে আনতে পারে কি না , সেটাই দেখার। শুধু বিধাননগর নয়, শহর, শহরতলি, গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় টোটোই ভরসা। সেখানেও কী একই নিয়ম লাগু করা হবে ? অপেক্ষায় মানুষ।