নয়াদিল্লি : 'খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর দফতরে রেশন বণ্টনে দুর্নীতির কথা জানতেন বালু'। জেরায় স্বীকার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। কোর্টে পেশ করা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর এই দাবি করেছে ইডি। এনিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধে সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন, "এটা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, এই দুর্নীতি করার জন্য ওঁর দলের নেতৃত্বের চাপ ছিল।"
চালকল-গমকল মালিক থেকে শুরু করে ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটরদের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এফআইআর দায়ের থেকে সিআইডি তদন্ত, খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সবই গোচরে ছিল জ্যোতিপ্রিয়র। গত ৩১ অক্টোবর জেরায় একথা স্বীকার করেছেন ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ব্যাঙ্কশাল আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর এই দাবি করেছে ইডি। এমনকী কেন্দ্রীয় সংস্থা এমন দাবিও করে যে, জ্যোতিপ্রিয় খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। উল্টে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় এজেন্সির এখানেই প্রশ্ন, খাদ্যমন্ত্রীর পদে থেকে রেশন বণ্টনে দুর্নীতির কথা জেনেও কেন কোনও পদক্ষেপ করেননি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক? নিষ্ক্রিয় থেকে পরোক্ষে কি তিনি দুর্নীতিকেই সমর্থন করেছেন? রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার পিছনে কি জ্যোতিপ্রিয়রই নির্দেশ ছিল? নাকি এর পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে? সূত্রের খবর, এখন এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে ED.
এপ্রসঙ্গে সুর চড়িয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "এটা তো পরিষ্কার যে খাদ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি জানেন দুর্নীতি হচ্ছে। কারণ, দুর্নীতিকে তিনি লালন-পালন করেছেন। আমার ধারণা, তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকেই তাঁকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে যেভাবেই হোক টাকা তুলতে হবে। সেটা দুর্নীতির প্রক্রিয়ায়...রেশন ডিলারদের কাছে হোক বা চালকল মালিকদের কাছ থেকে হোক। তিনি টাকা তুলেছেন। তাই তিনি বলেছেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। সেইজন্য ইডির কাছে তিনি যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, সেটা যর্থার্থ স্বীকারোক্তি। এটা থেকে এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, এই দুর্নীতি করার জন্য ওঁর দলের নেতৃত্বের চাপ ছিল।"
অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি এবং তৃণমূলের অনুমোদনেই এই দুর্নীতি সম্ভব হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তো এই দলের ফাইনান্সার ছিলেন। এই দলকে বিভিন্নভাবে তিনি ফান্ডিং করেছেন। একা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে তাঁকে কর্নার করার কোনও মানে হয় না। পুরো তৃণমূলই এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আছে।"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে