ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: সন্দেশখালির (Sandeshkhali Chaos) আবহে জোর করে জমি দখলের অভিযোগ উঠল বীরভূমে। একাধিক কৃষকের জমি জোর করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ অনুব্রত ঘনিষ্ঠ কেরিম খানের বিরুদ্ধে। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সিউড়ি বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী ও নানুরের তৃণমূল নেতা কেরিম খানের ছবি দেওয়া ও চোর লেখা পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ অনিচ্ছুক কৃষকদের একাংশের। 


জমি দখলের অভিযোগ: কেষ্টহীন বীরভূমে অনুব্রত (Anubrata Mondal) ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে জমি হাতিয়ে নেওয়া অভিযোগ পথে নামলেন নানুরের অনিচ্ছুক কৃষকরা। অনিচ্ছুক কৃষক নাজিরা বিবির অভিযোগ, “ওরা আমাদের জমি জোর জবরদস্তি করে দখল করেছ। পার্টি অফিসে ভরে কানে রিভালভার পিস্তল লাগিয়ে দখল করেছে।’’ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সিউড়ি বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী ও নানুরের তৃণমূল নেতা কেরিম খানের ছবি দেওয়া ও চোর লেখা পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় অনিচ্ছুক কৃষকদের একাংশ। মঙ্গলবার নানুরের বিডিও অফিসের সামনে বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা। তাঁদের অভিযোগ, “আমাদের অভিযোগ, আমাদের জমি আমরা ফেরত চাই। আর কেরিম খান, বাপ্পা, মাখন ওদের শাস্তি চাই। আমরা সেই জমি এই যে তিন বছর যে দখল করেছে তার ক্ষতিপূরণ আবার প্লাস আমরা জমি ফেরত চাই। আর ওদের শাস্তি চাই।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০২১ সালে নানুরে মিলন মেলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নামে প্রায় ৩০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়। তৎকালীন বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেতা আব্দুল কেরিম খানের নেতৃত্বে চলে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া। এলাকার কৃষকদের একাংশের অভিযোগ, জোর করে বেশির ভাগ জমি কেড়ে নেন কেরিম খান ও তার দলবল। কিছু মানুষ ক্ষতিপূরণ পেলেও বেশিরভাগ কৃষক ক্ষতিপূরণ পাননি। জমির কোনও রেজিট্রি হয়নি। এক অনিচ্ছুক কৃষক নিমাই ঘোষ বলেন, “আমাদের অভিযোগ হচ্ছে মেলার মাঠের জায়গা করে নিয়ে নিয়েছে কেরিম ভাই। কেরিম খান জোর করে ঘিরে নিয়েছে। তারজন্য আমরা আন্দোলন করছি। আমরা সমস্ত চাষী। আমাদের জমি যাতে অবিলম্বে ফেরত দেওয়া হয়।’’ বিক্ষোভের পর বিডিওর কাছে ডেপুটেশন জমা দেন অনিচ্ছুক কৃষকরা। এবিষয়ে নানুরের বিডিও সন্দীপ সিংহ রায় বলেন, “এলাকার কৃষকরা কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে লিখিতভাবে তাদের জমির সমস্যার কথা জানিয়ে গেছেন। বিষয়টি আমরা ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে কথা বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’


ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার দাবি, কেরিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাই তাকে জেলা পরিষদে টিকিট দেওয়া হয়নি। আর এই জমি নিয়ে আদালত মামলা চলছে। কেরিম খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফোন ধরেননি বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীও। সন্দেmখালির মতো বীরভূমেও এই বিক্ষোভের পেছনে বিরোধীদের উস্কানি দেখছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এই ধরণের ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। জানি না কোনও বিরোধীপক্ষের এতে কোনও উস্কানি আছে কিনা। এই ধরণের ঘটনা আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে সাহায্য করে।’’


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।   


আরও পড়ুন: Sandeshkhali Chaos: 'দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে,' সন্দেশখালির পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মন্তব্য বাদশা মৈত্রর