আবির ইসলাম, বীরভূম: বীরভূমের পাড়ুইয়ে তৃণমূলের (TMC) কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাল সিপিএম (CPM)। তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) টাকা গিয়েছে প্রাক্তন উপপ্রধানের ছেলের অ্যাকাউন্টে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন উপপ্রধান। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

  


আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ


একটি খড়ের চালের, অন্যটি নির্মীয়মাণ দ্বিতল, এই দুই বাড়ির দুই ছবি ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। খড়ের চালের এক বাড়ির মালিক নিতান্তই ছাপোষা এক গ্রামবাসী। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা অনুমোদনের পরও তা তিনি পাননি। 


অভিযোগ, তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধানের ছেলের অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনার টাকা জমা পড়েছে।  সেই প্রাক্তন উপপ্রধানের দোতলা বাড়ির নির্মাণকাজ চলছে। যদিও ওই প্রাক্তন উপপ্রধান তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 


বীরভূমে বোলপুর শ্রীনিকেতন ব্লকে পাড়ুইয়ের কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম।  সিপিএম-এর অভিযোগ, শুধু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নয়, দুর্নীতি হয়েছে ১০০ দিনের প্রকল্পেও। 


আরও পড়ুন: Partha Chatterjee: উপদেষ্টা কমিটি কেন গঠন করা হয়েছিল? দ্বিতীয় দফার জিজ্ঞাসাবাদে পার্থকে প্রশ্ন সিবিআইয়ের


স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার বাগদির দাবি,  প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তাঁর নামে টাকা অনুমোদন হলেও তা তিনি পাননি। তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় জমির ছবি তুলে নিয়ে গেছে। শুনেছি, টাকা অনুমোদন করেছে। তারপরও বাড়ি তৈরির টাকা পাইনি। পঞ্চায়েতে যাই। তখন পঞ্চায়েত  বলেছে, টাকা তুলে নিয়েছে কেউ।"


দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধান ও শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলেছে সিপিএম। স্থানীয় সিপিএম নেতা সপ্তম বাগদি বলেন, "আবাস যোজনার টাকা তোলা হয়েছে। তা গেছে তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধানের ছেলের অ্যাকাউন্টে। এমন ৯ জনের নামে টাকা তোলা হয়েছে, যে তালিকায় মৃত ব্যক্তিদে নামও রয়েছে। দুর্নীতি হয়েছে ১০০ দিনের কাজেও।"


তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধান পার্বতী বাগদি যদিও বলেন, "মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে। এর সঙ্গে আমি কোনওভাবেই যুক্ত নই।" তবে তৃণমূল নেতৃত্বের জানিয়েছেন, উপপ্রধানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখবে দল। কসবার অঞ্চল সভাপতি জামিরুদ্দিন খান বলেন, "১০০ দিনের কাজ নিয়ে যে অভিযোগ, তার কোনও ভিত্তি নেই। উপপ্রধানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে দল তদন্ত করবে।"


বিষয়টি খতিয়ে দেখাকর আশ্বাস প্রশাসনের


স্থানীয় প্রশাসনও অভিযোগ নিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। বোলপুর শ্রীনিকেতন ব্লকের বিডিও শেখর সাঁই বলেন, "১০০ দিনের কাজে কেন্দ্র এখনও টাকা পাঠায়নি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যে  অভিযোগ উঠেছে, তা আমার কাছে এখনও আসেনি। তা সত্ত্বেও তদন্ত করে দেখব। কেউ দোষী হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোট। সেদিকে তাকিয়েই কি স্থানীয় স্তরে দুর্নীতির অভিযোগে এখন থেকেই তত্‍পর সিপিএম? এই প্রশ্নও ঘুরছে এলাকায়।