ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, লাভপুর: পঞ্চায়েতের প্রাপ্য টাকা চলে গেল অন্য এক ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। টাকার অঙ্কটাও সামান্য় নয়, সাড়ে ২৮ লক্ষেরও বেশি। বিপুল অঙ্কের সরকারি টাকা কীভাবে অন্য়ের ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টে যেতে পারে? কার ভুল? নেপথ্য়ে তৃণমূলের কারসাজি দেখছে বিরোধীরা।
কীভাবে অন্য়ের অ্য়াকাউন্টে টাকা?
টাকার অঙ্কটা সাড়ে ২৮ লক্ষেরও বেশি। পঞ্চায়েতের এই বিপুল পরিমাণ টাকা চলে গেছে অন্য় একজনের অ্য়াকাউন্টে! প্রায় ৭ মাস হতে চলল, সরকারি এই টাকা এখনও উদ্ধার করা যায়নি। এমনই মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে বীরভূমের (Birbhum) লাভপুরে। লাভপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্য়াঙ্কের শাখায় ইন্দাস গ্রাম পঞ্চায়েতের অ্য়াকাউন্ট রয়েছে। অভিযোগ, ২০২৩-এর মে মাসের শেষে, পঞ্চায়েতের প্রাপ্য়, ২৮ লক্ষ ৬০ হাজার ১৩০টাকা এই ব্য়াঙ্কের শাখা মারফৎ চলে গেছে, খোকন দাস নামে এক ব্য়ক্তির অ্য়াকাউন্টে।
বর্তমানে ব্যাঙ্কের ওপর চাপ কমাতে বিভিন্ন জায়গায় কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট বা CSP খুলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। সেখানে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকার লেনদেন ও বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পাওয়া যায়। এই CSP-র দায়িত্ব থাকে একজন করে এজেন্ট। এই খোকন দাস হলেন ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্য়াঙ্কেরই CSP হোল্ডার। এই ঘটনার পর কেটে গেছে সাত মাস। কিন্তু এখনও উদ্ধার হয়নি সেই টাকা। যার জেরে থমকে রয়েছে পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজ। ইন্দাস গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “টাকা অন্য় অ্য়াকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যায়। পাসবুক আপডেট করতে গিয়ে দেখি অন্য় অ্য়াকাউন্টে টাকা চলে গেছে। ব্য়াঙ্ক অফিসার কোনও সদুত্তর দিতে পারে নি। থানায় জানাই। এই টারকার ঘাটতির কারণে উন্নয়নের কাজ ব্য়াহত হচ্ছে।’’ এবিষয়ে বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “সম্পূর্ণভাবে পুলিশ-প্রশাসন, ব্য়াঙ্ক ম্য়ানেজার তৃণমূলের সমস্ত নেতা-নেত্রী এর সঙ্গে জড়িত। ব্য়াঙ্ক ম্য়ানেজারকে অ্য়ারেস্ট করা উচিত। জনগণের উন্নয়নের টাকা ব্য়ক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করেছে তৃণমূল। দোষীরা যাতে অ্য়ারেস্ট হয়, আমরা সব করব। রাস্তায় নামব। হাইকোর্টে যাব।’’ সিপিএমের বীরভূম জেলা কমিটির সদস্য শেখ মফজুল করিম বলেন, “দায় সারা মানসিকতকা আছে অ্য়াডমিন, পুলিশের। সবাই এই চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত বলে আমরা মনে করি। ব্য়াঙ্ক কী করে টাকা দিল, সেটা তো একবারেই বলে দিতে পারে। শাসক দল ও স্থানীয় নেতৃত্ব যুক্ত।’’
সরকারি উন্নয়নের টাকা, কীভাবে এক অ্যাকাউন্টের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে গেল? কার ভুল? ৭ মাস পরও কেন সরকারি এই বিপুল টাকা উদ্ধার করা গেল না? উঠছে এমনই একাধিক প্রশ্ন। এই ঘটনায় পঞ্চায়েতের তরফে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। যার ভিত্তিতে খোকন দাসকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। কিন্তু ২ মাসের মধ্য়েই তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। আর এতেই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। লাভপুরের বিডিও শিশুতোষ প্রামাণিক বলেন, “আমাদের ব্লক প্রশাসন থেকে তার বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছে। জেল হেফাজত হয়েছে। বিষয় ব্য়বস্থার ওপর আস্থা আছে। আমরা আশাবাদী সুদ সহ সব টাকা উদ্ধার হবে।’’
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: WB Corona Update: একদিনে আক্রান্ত ১৩, বাংলায় এই মুহূর্তে করোনা পজিটিভ কত?