ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বীরভূম: বীরভূমের বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবণে মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান। তবে এখানে স্নানের মজা একটু আলাদা। তার কারণ এখানে পুণ্যার্থীরা স্নান করছেন গরম জলে। গরম জলে মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নানের মজা নিচ্ছেন তাঁরা।


মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান: আজ মকর সংক্রান্তি। প্রয়াগরাজ থেকে গঙ্গাসাগর, ডুব সাগরে পুণ্যস্নান। পুণ্যার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। মাহেন্দ্রক্ষণে সূর্য প্রণাম করতে সামিল কোটি কোটি মানুষ। শীত উপেক্ষা করেই পুণ্যস্নান। পূণ্যলাভের আশায় হাজার হাজার মাইল ছুটে আসা ভক্তকূল, ধ্যানমগ্ন সন্ন্যাসী, দেশি-বিদেশি অতিথি। সব মিলে মিশে একাকার। বীরভূমের বক্রেশ্বর ৫১ পীঠের অন্যতম সতীপীঠ। তাই ভক্তদের বিশ্বাস, বক্রেশ্বরের স্নান করলে যে আলাদা পুণ্য অর্জন করা যায় ৷ আর সেই কারণেই মঙ্গলবার ভোর থেকে পুণ্যার্থীদের লাইন পড়ে গিয়েছে স্নানের জন্য। স্নানের পর বক্রেশ্বর মন্দিরে পুজো দেন পুণ্যার্থীরা। বক্রেশ্বরে বেশ কয়েকটি উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে ৷ যার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি। অন্যদিকে এখানে রয়েছে শীতলকুণ্ডও। বিভিন্ন কুণ্ড থেকে গরমজল পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়ে এসে স্নানের ঘাট তৈরি করা হয়েছে এখানে। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা স্নানের ঘাট রয়েছে।


এদিকে গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঐতিহ্যবাহী জয়দেব কেন্দুলির মেলা উদ্বোধন হয়েছে। এই মেলা উপলক্ষে অজয় নদের চরে লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। মকরের পুণ্যস্নানের পর পুণ্যার্থীরা রাধাবিনোদের মন্দিরে পুজো দেন। পাশাপাশি হাজার-হাজার বাউল, ফকির মকর সংক্রান্তির দিন সমবেত হন মেলায়। সোমবার সকাল থেকেই পুণ্যার্থীদের ভিড় জমতে শুরু করে। বিকেলে সেই ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রস্তুত জেলা পুলিশ ও প্রশাসন।


অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মন্দির ও মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরা। এমনকি, ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো প্রশাসন।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর মেলা প্রাঙ্গণে ২০০টি সিসি ক্যামেরা ও ১৬টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। ভক্ত ও পুণ্যার্থী, পর্যটকদের সহায়তায় মেলার বিভিন্ন প্রান্তে ৩৩টি পুলিস অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ বসানো হয়েছে। স্নানের ঘাটে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য তিনটি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম রাখা হয়েছে। যানজটে যাতে মেলা অবরুদ্ধ না হয় সেদিকেও সতর্ক প্রশাসন। মেলার বাইরে আটটি পার্কিং ও ২৩টি ড্রপগেট বসিয়েছে ব্লক প্রশাসন। এছাড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে পাঁচটি ফায়ার ফাইটিং টিম রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ১৬৩৪জন সিভিক ভলান্টিয়ার, ৭৩৬জন পুলিশকর্মী, ১৭টি অ্যান্টি ক্রাইম টিম ঘুরবে মেলা প্রাঙ্গণে। মহিলাদের নিরাপত্তায় দু'টি উইনার্স টিম থাকছে মেলায়।


আরও পড়ুন: Saline Controversy: জমাট বাঁধছে না রক্ত, ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুস ও কিডনি; কেমন আছেন SSKM-এ চিকিৎসাধীন ৩ প্রসূতি?