ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম : সন্তানকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়ার পথে চাঁদার জুলুমের শিকার সেনা জওয়ান। কালীপুজোর চাঁদা দিতে না চাওয়ায় সিউড়িতে সেনা জওয়ানকে বেধড়ক মারধর। জওয়ানের স্ত্রীকেও হেনস্থা অভিযুক্তদের, তাঁর মোবাইল ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগ, জওয়ান যে টোটোয় যাচ্ছিলেন, তা আটকে চাঁদা চান স্থানীয় ৫-এর পল্লি ক্লাবের সদস্যরা। 'সন্তানকে ডাক্তার দেখিয়ে এসে চাঁদা দেবেন বলেন সেনা জওয়ান'। তারপরেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এক অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। সেনা জওয়ান গোপীনাথ দত্ত কাশ্মীরে কর্মরত, বর্তমানে ছুটিতে বাড়ি এসেছেন তিনি।
দুবরাজপুর থেকে সিউড়িতে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন সেনা হওয়ান গোপীনাথ দত্ত। ৫ মাসের বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলেন তিনি। বাচ্চা অসুস্থ ছিল, তাই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিলেন সেনা জওয়ান। মাঝপথেই টোটো আটকে কালীপুজোর চাঁদা চাওয়া হয়। সেনা জওয়ান চাঁদা দেবেন না, এমন কথা কিন্তু বলেননি। বলেছিলেন, ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে চাঁদা দেবেন। কিন্তু চাঁদা চাইছিলেন যাঁরা, তাঁদের তর সয়নি। তৎক্ষণাৎ কেন চাঁদা দেওয়া হয়নি, তার জন্য শুরু হয় হেনস্থা। জওয়ানের স্ত্রী'র মোবাইল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে সিউড়ি থানার পুলিশ। সেনা জওয়ান ও তাঁর পরিবারের বাকিদের উদ্ধার করা হয়। বাচ্চাটিকে ডাক্তারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয়দেরও দাবি, এই ঘটনার যতজন জড়িত সকলের জন্য যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয় পুলিশের তরফে।
সেনা জওয়ানের স্ত্রী তাঁরা চাঁদা দেবেন না একবারও বলেননি। ছোট্ট বাচ্চা অসুস্থ, তাকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে, একথাই জানিয়েছিলেন। যে পথে যাচ্ছিলেন সেই পথেই ফিরতেন তাঁরা। ফেরার সময় চাঁদা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে পোষায়নি চাঁদা নিয়ে জুলুম করা ব্যক্তিদের। কেন সঙ্গে সঙ্গেই চাঁদা দেওয়া হবে না, তার জন্য বেধড়ক মারধর করা হয় সেনা জওয়ানকে। অভিযোগ তাঁর স্ত্রীকেও মারধর করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেনা জওয়ানের স্ত্রী'র অভিযোগ যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সকলকে যেন পুলিশ গ্রেফতার করে। আতঙ্কে ভুগছেন সেন জওয়ানের পরিবার। অসুস্থ ৫ মাসের বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য কার্যত হাতে-পায়ে ধরে অনুনয় করেন সেনা জওয়ানের পরিবারের লোকেরা। কিন্তু তাঁদের যেতে দেওয়া হয়নি। সাফ জানানো হয়, চাঁদা না দিলে যেতে দেওয়া হবে না। টোটো আটকে দেওয়া হয়। সেনা জওয়ানের স্ত্রী'র অভিযোগ যথেষ্ট চোট-আঘাত পেয়েছেন তিনি।