ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম - রামপুরহাটে (Rampurhat) স্কুল চলাকালীন স্কুল চত্বরে মাইক বাজিয়ে বিজয়া সম্মিলনী করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। এই ঘটনা সামনে আসতেই সমালোচনার মুখে পড়েছ শাসক দল। সরব হয়েছেন বিরোধীরা। চাপে পড়ে এবার স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকার কাছে হাত জোর করে ক্ষমা চাইলেন রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় (Asis Banerjee)। তিনি জানিয়েছেন, স্কুল খোলা আছে তা তিনি জানতেন না। তাহলে কোন ভাবেই এভাবে সম্মেলন আয়োজন করা হত না।
গত শুক্রবারের ঘটনা ঘিরে মূল অভিযোগ। সেদিন সকাল ১১ টা থেকে রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে রামপুরহাট শহর তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান শুরু হয়। জেলার দুই সাংসদ, শতাব্দী রায় ও অসিত মাল ছাড়াও সেখানে ছিলেন রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র জেলা সভাপতি ত্রিদিব ভট্টাচার্য, রামপুরহাট শহর তৃণমূল সভাপতি তথা পুরপ্রধান সৌমেন ভকত, দলের রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি প্রমুখ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শাসক দলের নেতারা যখন মাইকে বক্তৃতা করছিলেন, তখন ওই স্কুলেরই ভিতরে থাকা নিম্ন বুনিয়াদি বালিকা বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল ১৭২ জন ছাত্রী। ক্লাস চলছিল ওই খুদে পড়ুয়াদের। ছিলেন শিক্ষিকারা। নেতারা একদিকে তাঁদের বক্তব্য যখন রাখছেন, তখন উল্টোদিকে গমগম করছিল শ্রেণিকক্ষ। নেতাদের বক্তব্য রাখার পর স্কুলেই খিচুড়ি, আলুর দম, তরকারি ও চাটনি সহযোগে খাওয়া-দাওয়ার পরে বিজয়া দুপুর ২ টো নাগাদ। সম্মিলনীর অনুষ্ঠান যখন শেষ হয় কয়েক ঘণ্টা পরে।
স্কুল চলা সত্ত্বেও এভাবে মাইক বাজিয়ে বিজয়া সম্মিলনী চলার মাঝে কোনও অভিযোগ করলেন না কেন ? জানতে চাইলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মমতা মণ্ডলের যুক্তি, “সকলেই তো জানেন, স্কুল খোলা আছে। আমাদের কী করার আছে বলুন?' মাইকের আওয়াজে বিরক্ত হলেও সব শিক্ষিকাই নীরবই ছিলেন। আর গোটা ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের পর স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার পরে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'স্কুলের ভিতরে আর একটি স্কুল চালু রয়েছে, তা একদমই খেয়াল ছিল না। আমাদের ভুল হয়েছে। ভুল স্বীকার আমি শিক্ষিকাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।'
আরও পড়ুন- বেপরোয়া অটোচালকের ধাক্কা সাইকেলে, প্রতিবাদ করলে থানার অদূরে মেরে ফাটিয়ে দেওয়া হল মাথা