ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বীরভূম: রাতভর টানা বৃষ্টি, আর তাতেই বীরভূমে ফিরল জলছবি। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে রোগী ও তাঁদের পরিজনের অভিযোগ বিস্তর। এ বার টানা বৃষ্টিতে জল ঢুকল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে।
হাসপাতালের পুরনো ভবনের ভিতরে থাকা পিপিপি মডেলের এক্স-রে রুমে জল ঢুকে যাওয়ায় জরুরি বিভাগের রোগীদের এক্স-রে পরিষেবা দেওয়াই বন্ধ হয়ে গেল শুক্রবার থেকে। একই ভাবে বন্ধ রয়েছে স্ক্যান মেশিন।
এর ফলে রোগীদের বাইরে থেকে বেশি অর্থের বিনিময়ে এক্স-রে এবং স্ক্যান করাতে হচ্ছে। হাসপাতাল ভবনের বাইরের চত্বরও জল থইথই। সেই জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয়েছে সকলকে। রামপুরহাট মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি বিধানসভায় আছি। জল নিকাশি সমস্যা নিয়ে শনিবার পূর্ত হাসপাতালের বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলব।”
নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটিতে সামান্য বৃষ্টিতেও রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে জল জমে যাওয়ার সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে বছর ছয়েক আগে মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন ভবন তৈরি হওয়ার সময় থেকে এই সমস্যা আরও বেশি করে দেখা দিয়েছে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ভবনের সামনে জমা জল সরাতে তিনটি পাম্প বসিয়েও সুরাহা হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালের প্রধান প্রধান নিকাশি নালার সঙ্গে জাতীয় সড়কের ধারে নিকাশি নালার সংযোগ আছে। জাতীয় সড়কের ধারে নালা পরিষ্কার না-থাকার জন্যই হাসপাতালের জল বেরোতে পারছে না।
তথা উপাধ্যক্ষ (এমএসভিপি) পলাশ দাস জানান, এর আগেও জল ঢুকে যাওয়ায় পিপিপি মডেলের এক্স-রে রুমে শর্ট সার্কিট হচ্ছিল। এর ফলে এক্স-রে বন্ধ রাখা হয় ৫ দিন থাকে। যন্ত্ৰ সারাই করে পরিষেবা চালু হয়। কিন্তু, শুক্রবার পুনরায় জল ঢুকে ফের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ দিন সকালে এক্স-রে ঘরে গিয়ে দেখা যায় ঘরের ভিতর থেকে জল কর্মীরা বের করার চেষ্টা করছেন। কর্মীরা জানান জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে জল ঢুকে এক্স-রে যন্ত্রের বোর্ড ও নেটওয়ার্ক কেবল খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ করে ৫ দিন পরে পরিষেবা চালু করা হয়। এই অবস্থায় আবারও জল ঢুকে বোর্ড খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। ফলে পরিষেবাও বন্ধ রাখতে হয়েছে।
আরও পড়ুন, দ্বারকার জলের ভাসছে তারাপীঠ মহাশ্মশান, বন্ধ হল দাহকাজ
বীরভূমের জলছবি
দ্বারকা নদীর জল ঢুকেছে তারাপীঠ মহাশ্মশানে। জলমগ্ন অংশে বন্ধ রয়েছে দাহকাজ। জলমগ্ন কঙ্কালিতলা মন্দির চত্বরও। জলের তলায় বীরভূমের সাঁইথিয়ায় ময়ূরাক্ষী নদীর ২টি অস্থায়ী সেতু। ঝুঁকি নিয়ে, বিপজ্জনকভাবে রেলসেতু ধরে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে বোলপুর-রামপুরহাট এবং সাঁইথিয়া-বহরমপুরের মধ্যে। অন্যদিকে, কুয়ে নদীর জলে ভাসছে লাভপুরের ঠিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম। সেতু ডুবে যাওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ। ফাটল ধরেছে কুয়ে নদীর বাঁধে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে মেরামতি। ইলামবাজারে শাল নদীর জল সেতুর ওপরে উঠে যাওয়ায় পাড়ুই যাওয়ার রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জয়দেবে ভেঙে গেছে অজয় নদীর অস্থায়ী সেতু। এর ফলে, বীরভূমের সঙ্গে দুর্গাপুরের যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে
https://whatsapp.com/channel/0029VaCBCh6545uwkeNBg11y