ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম : টানা কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে কুয়ে নদীর। বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে জল। নদী বাঁধের একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই ফাটল দিয়েও বেরিয়েও আসছে জল। এর ফলে আতঙ্কিত আশপাশের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। এদিকে কুয়ে নদীর জল বাড়তেই কীর্ণাহার থেকে লাভপুরের ঠিবার দিকে যাওয়ার মূল রাস্তায এখন জলের তলায়। রাস্তার উপর দিয়েই বইছে নদী। ফলে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে পড়েছে যান চলাচল। বাধ্য হয়ে প্রশাসন নামিয়েছে নৌকা। আর এখন সেটাই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এলাকার বাসিন্দাদের।
বীরভূমের লাভপুর ব্লকের ঠিবা অঞ্চলের একাধিক গ্রাম কার্যত জলবন্দি অবস্থায় রয়েছে গত কয়েকদিনের লাগাতার বর্ষণের কারণে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দ্রুত কোনও বিকল্প ব্যবস্থা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিশেষ করে স্কুল, হাসপাতাল বা বাজারে যাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, কুয়ে নদীর উপর যে রাস্তা দিয়ে সাধারণত যাতায়াত চলে, সেটি বর্তমানে বিপজ্জনক। সেই রাস্তা এড়িয়ে চলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষকে। একইসঙ্গে এলাকায় নজরদারির জন্য রাখা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রশাসন নৌকা নামালেও গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, শুধু সাময়িক নৌকা পরিষেবা নয়, স্থায়ী সমাধান চাই এই সমস্যার। এদিকে লাভপুরের ইন্দাস অঞ্চলের, গোকুলবাটি,সাহাপুর এলাকায় কুয়ে নদীর বাঁধে দেখা দিয়েছে ফাটল। বসে গিয়েছে নদীর বাঁধ, বের হচ্ছে জল। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার মানুষ। স্থানীয়রাই রাত্রি পাহারা দিচ্ছেন বাঁধের উপর। কখন না জানি ভেঙ্গে পড়ে নদীর বাঁধ, আতঙ্কে ভুগছেন এলাকাবাসী। ইতিমধ্যেই জলের তলায় চলে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার ধান জমি। বর্ষার ঠিক আগেই মেরামত করা হয়েছিল বিভিন্ন জায়গায় নদীর বাঁধ। এলাকাবাসীর অভিযোগ সেই বাঁধ ঠিকমতো মেরামত না হওয়ার ফলেই এভাবে ফাটল দেখা দিয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
উত্তরবঙ্গে অতি ভারীবৃষ্টির পূর্বাভাস ছিলই। এবার উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও, বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে পূর্বাভাস বলছে, আগামী বুধবার থেকে বাড়তে পারে তাপমাত্রা। সেইসঙ্গে থাকবে আদ্রতাজনিত অস্বস্তি। সব মিলিয়ে, ভ্যাপসা গরমে ভোগান্তিতেই থাকবে সাধারণ মানুষ। যদিও, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে ভারী বৃষ্টি।