কলকাতা: বালি-পাথর খাদান থেকে বখরার টাকা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে যেত বলেও দাবি বিজেপি-র। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে জমা দেওয়া রিপোর্টে তার উল্লেখ করেছে তারা। অন্য কেউ নন, বীরভূমে তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) দিকেই বিজেপি-র (BJP) ইঙ্গিত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। অনুব্রতকে গ্রেফতারের ষড়যন্ত্র চলছে বলে দাবি করলেন তিনি।
মাফিয়ার টাকা তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতাদের হাতে ওঠে, দাবি বিজেপি-র
রামপুরহাটের (Rampurhat Fire) বগটুইকাণ্ডে (Bogtui Arson) বুধবারই বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতিকে আজ রিপোর্ট জমা দেয় দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সেখানে ঘটনার সঙ্গে বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রতর যোগ থাকার অভিযোগ তোলা হয়। রিপোর্টে দাবি করা হয় যে, সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা ও স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ তৃণমূল সরকার। বালি, পাথর, কয়লা এবং অন্যান্য মাফিয়ার টাকা তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতাদের কাছে যায়।
রামপুরহাটে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড! ৯ জনের দগ্ধ হয়ে মৃত্যু। বারবার কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে বিজেপি (BJP)। শুভেন্দু অধিকারী ৩৫৬ ধারা জারির দাবি জানাচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কাছে রামপুরহাটকাণ্ড নিয়ে ২৪ পাতার রিপোর্ট জমা দিল বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। তার ১৯ নম্বর পাতায় দাবি করা হয়েছে যে, বগটুই গণহত্যাকাণ্ডের পর, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্যই, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর যোগ নিশ্চিত করে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, শর্ট সার্কিট বা টিভিতে বিস্ফোরণের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।
অনুব্রতকে গ্রেফতারের চক্রান্ত চলছে, দাবি মমতার
আর এই রিপোর্টের মধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের ছক দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “ওরা রিপোর্টে আমার জেলা সভাপতির নাম করেছে। এটা খুব খারাপ। তদন্ত না করে কী করে আমার জেলা সভাপতির নাম উল্লেখ করতে পারে? তার মানে ওকে গ্রেফতার করতে চায়! এটা তো ব্যক্তিগত শত্রুতার ব্যাপার হয়ে যাচ্ছে। সবাইকে গ্রেফতার করতে চায়।”)
যদিও বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘‘অনুব্রত এত দিন কেন গ্রেফতার হননি, সেটাই তো অদ্ভুত ব্যাপার! ওঁর তো অবশ্যই গ্রেফতার হওয়া উচিত। সিবিআই গরুপাচার কাণ্ডে ডাকছে। আর উনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন: Mamata On Rampurhat : 'রামপুরহাটকাণ্ড বিজেপির বড় ষড়যন্ত্র' , প্রশ্ন তুলে তোপ মমতার
গরু পাচারকাণ্ডে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে এখনও পর্যন্ত চার বার তলব করেছে সিবিআই।একবারও হাজির হননি অনুব্রত।হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চ, দু’জায়গাতেই তাঁর রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি অনুব্রত মণ্ডলের ওপর চাপ বাড়ছে? এবার কী পদক্ষেপ করবে সিবিআই? কোন পথে হাঁটবেন অনুব্রত মণ্ডল? এ নিয়ে মমতার বক্তব্য, “ যারাই বিজেপি-র বিরোধিতা করছে, ওরা সবাইকে গ্রেফতার করতে চায়। এ ভাবেই সবার মুখ বন্ধ করতে চাইছে বিজেপি।” পাল্টা সুকান্তর বক্তব্য, “ ব্যক্তির রাজনীতিতে থাকা সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক। যিনি গুড়-বাতাসা, চড়াম-চড়াম রাজনীতির কথা বলেন, তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হবে না?’’