বোলপুর: ছাত্র বিক্ষোভে ফের উত্তাল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)। বুধবার সেখানকার পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakraborty)। আবার পড়ুয়ারা তাঁর গায়ে হাত তুলেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন উপাচার্য। তা নিয়ে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল বিশ্বভারতীতে (Santiniketan)।
দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল বিশ্বভারতীতে
বুধবার বিক্ষোভ চলাকালীন বিশ্বভারতী থেকে যে ভিডিও সামনে আসে, তাতে উপাচার্যের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ত দেখা যায় পড়ুয়াদের। ওই ভিডিও-য় এক পড়ুয়াকে বলতে শোনা যায়, "আপনি কতটা জালি লোক সবাই জানে। মুখ দেখাবেন না। পারলে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন। ঘেন্না লাগছে।" এর পাল্টা উপাচার্য বলেন, "সব শুনছ তোমরা? এরপর কিন্তু সেভাবেই পড়বে!"
তাতে সমস্বরে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠেন পড়ুয়ারা। তাঁদের বলতে শোনা যায়, "ছাত্রদের গায়ে গুলি চালাতে বলেছিলেন। ছাত্রদের গায়ে গুলি চালাতে বলেছিলেন, এরকম ভাইস চ্যান্সেলর, রাবীন্দ্রিক।" উপাচার্যের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদের উদ্দেশে পড়ুয়ারা বলেন, "ও ভাই মারো না... তোমায় গুলি চালাতে বলেছে, তুমি এখনও চালাওনি। স্যরের কথা এরকম করে অমান্য করছ?"
এই নিয়ে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। দফায় দফায় উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। তাতে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের হাতাহাতি লেগে যায়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি, মারামারি। তাতে এক পড়ুয়া আঘাত পান। এক নিরাপত্তারক্ষীর রক্তও ঝরে।
বুধবার, দফায় দফায় অশান্ত হয়ে ওঠে শান্তিনিকেতন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সহ একাধিক দাবিতে উপাচার্যকে ঘেরাও করে পড়ুয়াদের একাংশ। দাবি-দাওয়া মানা না হলেও ঘেরাও তোলা হবে না বলে হুঁশিয়ারিও দেন পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ঘেরাও থাকাকালীন, নিরাপত্তারক্ষীকে ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন উপাচার্য। এক পড়ুয়া বলেন, "ওঁর যে ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী, তাঁকে বলছেন গুলি চালাও। পিস্তল বার করে গুলি চালানোর নির্দেশ দিচ্ছেন।"পড়ুয়াদের আর এক জন বলেন, "ছাত্রছাত্রীরা তাঁর সামনে এসে যখন দাবি দাওয়া করে গোল করে দাঁড়িয়ে তিনি তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ওপর প্রহার করান।"
এর পাল্টা পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলেন উপাচার্য। তিনি বলেন, "আমাকে যদি মারধর করা হয়, মারবে না? আমার আঙুল মুচকে দিয়েছে।" উপাচার্যের দাবি, তাঁর কাছে প্রমাণ ওরয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন পড়ুয়ারা। উপাচার্য মিথ্যা বলছেন বলে দাবি করেন তাঁরা। বরং
উপাচার্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা, হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। এক পড়ুয়া জানান, গবেষণার কাজ নিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁকে। ছাত্র রাজনীতি করেন, উপাচার্যের বিরোধিতা করেন বলেই এমন ঘটছে তাঁর সঙ্গে।
সমস্বরে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠেন পড়ুয়ারা
কিন্তু উপাচার্য বলেন, "ওরা মারধর করতে এসেছিল।মহিলাদের মেরেছে। আমাকেও মেরেছে। মারধর করতে এসেছে এঁরা। মারধর করতে এসেছে এঁরা। প্রথমত ওরা ছাত্র নয়। ছাত্র হলে মাস্টারমশাইকে মারত না। মাস্টারমশাইয়ের গায়ে হাত দিত না। ভিসির গায়ে হাত দিত না। দরজা খুলে ঢুকে যাচ্ছে। আমার ফোন কাড়ছে। আমার আঙুল মুচকে দিচ্ছে। গুলো করত না। তারা ছাত্র নয়।" গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলেও দাবি করেন তিনি।