বীরভূম: গরুপাচার মামলায় জেলে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। দিল্লি যাওয়া কোনও রকমে ঠেকিয়ে রাখা গেলেও, অন্য মামলায় জেলেই তিনি। তাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections 2023) আগে বীরভূমে (Birbhum) তৃণমূলের (TMC) সংগঠনে প্রভাব পড়তে চলেছে বলে আগে থেকেই প্রমাদ গুনছিলেন অনেকে। মঙ্গলবার সেই আশঙ্কা বাস্তব হয়ে ধরা দিল। কারণ প্রকাশ্যে অভিমান এবং ক্ষোভের কথা জানিয়ে তৃণমূল ছাড়লেন, অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা বিপ্লব ওঝা (Biplab Ojha)।তৃণমূলে সম্মান পাচ্ছেন না জানাতে, পদ্মশিবির থেকে ডাকও পেলেন তিনি। 


তৃণমূল ছাড়লেন অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা বিপ্লব ওঝা


বিপ্লব বীরভূম জেলা পরিষদের সদস্য। বীরভূমে তৃণমূলের সহ-সভাপতিও ছিলেন। অনুব্রতর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত তিনি। তাঁর দাবি, গত এক বছর ধরে দলের কাছে তিনি ব্রাত্য হয়ে গিয়েছেন। দলে সম্মান পাচ্ছেন না। কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে ডাকার পর্যন্ত প্রয়োজন বোধ করে না দল, মঙ্গলবার এমনই একগুচ্ছ অভিযোগ সামনে এনেছেন বিপ্লব। তাঁর এই প্রকাশ্য দাবি অস্বস্তিতে ফেলেছে তৃণমূলকে। 


মঙ্গলবার এবিপি আনন্দের ক্যামেরায় পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন বিপ্লব। তিনি বলেন, "এই মুহূর্তে আমি বলতে পারি, তৃণমূলের সংস্পর্শ ত্যাগ করছি । বিগত এক বছর ধরে দেখছি, আমার সম্পর্কে অন্য মনোভাব পোষণ করছে তৃণমূল। মিটিং, মিছিল, কর্মসূচি সম্পর্কে জানানো হয় না। আমাকে বাদ রেখেই সব হচ্ছে। দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করেছি। তার পরই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি মানুষের সঙ্গে থাকা লোক। তাই যখন হচ্ছে না, তাই ভাবলাম, তৃণমূলের হয়ত আমাকে আর প্রয়োজন নেই। তাহলে জোর করে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ঘুরে লাভ কী!"


আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: বিজেপি করেন বলে মিঠুনকে বয়কটের চেষ্টা! দাবি দিলীপের


বিপ্লব প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানাতেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে নেমে পড়েছে বিজেপি। বীরভূমে বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব সরাসরি বিপ্লবকে পদ্ম শিবিরে স্বাগত জানিয়েছেন। সেখানে বিজেপি-র সাংগঠনিক সভাপতি ধ্রুব সাহাকে বলতে শোনা যায়, "অনেক লোকেদের সমাগম দেখব আমরা। নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি-র আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকে যোগ দেবেন। দেখুন না কী হয়!" বিপ্লবও কি তাহলে যোগ দেবেন বিজেপি-তে, উত্তরে ধ্রুব বলেন, "সময় হলে বলব। আমাদের দলে সম্মান পাওয়া যায়।" তবে সর্বভারতীয় দলের হয়ে কাজ করতে ইচ্ছুক হলেও, বিজেপি-তে যাওয়া নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেননি বলে দাবি করেন বিপ্লব। 


বিপ্লব প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানানোর পরও যদিও ভাবিত নয় তৃণমূল!


বিপ্লব প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানানোর পরও যদিও ভাবিত নয় তৃণমূল। অন্তত প্রকাশ্যে তেমনই দাবি করছে তারা। বীরভূমে দলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "বিপ্লবদাকে দলগত ভাবে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। উপনির্বাচনে প্রার্থীও করা হয়। পৌরসভার চেয়ারম্যানও করার প্রচেষ্টা হয়। এর পরও যদি কেউ ছাড়তে চান, তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। তবে দল ছেড়ে যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে কী সুবিধা পাবেন, ভেবে দেখা উচিত। এর আগেও অনেকে ছেড়ে গিয়েছেন, সবাই শুভেন্দু অধিকারী হননি।" তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন জানান, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নির্দিষ্ট ফোরামে অভিযোগ জানাতে পারতেন বিপ্লব।