অরিন্দম সেন, ঝিলম করঞ্জাই ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : মঙ্গলবার ছিল বিরসা মুণ্ডার জন্মদিন। আদিবাসীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নৃত্য, আদিবাসী বাড়িতে সুকান্তর মধ্যাহ্নভোজ, আদিবাসী পাড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর চপ ভাজা, রাইপুরে শুভেন্দুর সভা। সারাদিন আদিবাসীদের দুয়ারে রাজনৈতিক নেতা - নেত্রীরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নজরে আদিবাসী ভোট !
আদিবাসীদের দুয়ারে রাজনীতিকরা
আদিবাসীদের দুয়ারে পৌঁছে গেল তৃণমূল-বিজেপি দু’ দলই। ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে সভা করার পাশাপাশি, বিরসা মুন্ডার মূর্তি উন্মোচন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই জেলার আরেক প্রান্তে, আদিবাসী বিজেপি কর্মীর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর বাঁকুড়ার রাইপুরে বিরসা মুণ্ডার জন্মদিবস উপলক্ষ্যে মিছিল করলেন শুভেন্দু অধিকারী। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আদিবাসী ভোটারদের মন জয়ের মরিয়া চেষ্টা তৃণমূল-বিজেপির।
আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ খেয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ' আমরা সবসময় আদিবাসীদের পাশে থাকি। ভোটের রাজনীতি করি না। আদিবাসীকে রাষ্ট্রপতি করেছেন প্রদানমন্ত্রী মোদি।' পাল্টা তৃণমূল বিধায়ক-মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, 'অনেকে আদিবাসীদের বাড়িতে খায় লোক দেখাতে...কিন্তু আদিবাসীদের জন্য প্রকৃত উন্নয়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী'
আদিবাসী ভোট কেন গুরুত্বপূর্ণ
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে আদিবাসী জনসংখ্যা ৫২ লক্ষ ৯০ হাজার। অর্থাৎ রাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ শতাংশ। এরাজ্যে আদিবাসী জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া , এবং পুরুলিয়া জেলায়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফল অনুযায়ী, আদিবাসী অধ্যুষিত ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপির দখলে ছিল ১৩টি আর তৃণমূলের দখলে ছিল ৩টি আসন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এই ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে যায় ৯টি আসন আর বিজেপি পায় সাতটি আসন। এবার সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তাই সবার নজরে সেই আদিবাসী ভোট।
স্বাধীনতার সত্তর বছরে আদিবাসীদের প্রকৃত উন্নয়ন কী সত্যিই হয়েছে? না কি নিছকই ভোট এলেই আদিবাসীদের কাছের মানুষ হওয়ার চেষ্টা করে সব শাসক, আর ভোট মিটলেই সেই তিমিরেই আদিবাসীরা?