ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও নান্টু পাল, বীরভূম : পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) দিন ঘোষণা হয়নি। দলের তরফে প্রার্থীদের নামও প্রকাশ করা হয়নি। অথচ তার আগেই বিজেপি প্রার্থীদের নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে বীরভূমের (Birbhum) মল্লারপুরে। তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। 


পঞ্চায়েতের টিকিট নিয়ে দ্বন্দ্ব


কে পাবে পঞ্চায়েতের টিকিট ? গ্রাম-বাংলার ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হলেও, তার প্রার্থীপদ নিয়ে শাসকদলের অন্দরে ইতিমধ্যেই সংঘাত শুরু হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় পঞ্চায়েতের টিকিট নিয়ে বিবাদে খুন হয়েছেন ২ তৃণমূল কর্মী। তাঁর পছন্দের প্রার্থী তালিকায় সিলমোহর না দিলে, তাঁদের নির্দল হিসেবে দাঁড় করাবেন। খোদ দলনেত্রীকে এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। পঞ্চায়েতে টিকিট নিয়ে টানাপোড়েনের ছবি এবার বিজেপিতেও (BJP)। কবে হবে পঞ্চায়েত ভোট, তা এখনও ঘোষণা হয়নি। দলের তরফে প্রার্থী তালিকাও প্রকাশিত হয়নি। অথচ প্রার্থীর নাম লিখে প্রচার শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।


দেওয়াল লিখন নিয়ে কী দাবি


বীরভূমের মল্লারপুরে ঝিকাড্ডা গ্রামপঞ্চায়েতের লোহাজং গ্রামে ঘটেছে যে ঘটনা। পরিমল সাহা এবং সুপ্রিয়া সাহা, পদ্মশিবিরের প্রার্থী হিসেবে এখন থেকেই দুজনের নাম উঠে গেছে দেওয়ালে। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিজেপি কর্মী পরিমল সাহার দাবি, আমি প্রার্থী হয়েছি। বিজেপি দলের। দল সিদ্ধান্ত করেছে এবং দলের অনুমতিতেই দেওয়াল লিখন হয়েছে। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি সক্রিয় কর্মী। ২০১৮ সালেও প্রার্থী ছিলাম। এখনও আছি। এদিকে, ময়ূরেশ্বর এক নম্বর ব্লকের বিজেপির আহ্বায়ক কাজল সাহা। ২০২০ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সেই কাজল সাহাকেও দেখা গেছে, স্ত্রী সুপ্রিয়া সাহার নাম প্রার্থী হিসেবে দেওয়ালে লিখছেন তিনি। বিজেপির ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের আহ্বায়ক কাজল সাহার বক্তব্য, প্রার্থীর রিজার্ভেশন যখন থেকে শুরু হয়, ভারতীয় জনতা পার্টির তরফে আমরা মনে করছি ভোট শুরু হয়ে গেছে। রিজার্ভেশন লিস্ট পাওয়ার পর থেকেই প্রচার শুরু করেছি। ২০টার মধ্যে ১৬টা ওয়ার্ডে প্রার্থী সিলেকশন হয়ে গেছে।


রাজনৈতিক তরজা


দেওয়াল লিখনের যে ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূল নেতা ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি বিচিত্র দল। নির্বাচনে জেতার আগেই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২১০টি সিট দাবি করে বসেন। এই ব্লকে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সাংঘাতিক আকার নিয়েছে। নমিনেশন পাওয়ার আগেই কাজল সাহা মূলত বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ করে দিল। পাল্টা বিজেপি, বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেছেন, 'অতি উৎসাহ। এটা হওয়া উচিত হয়নি। বিজেপি পার্টির সব জায়গায় ক্যান্ডিডেট রেডি হয়েছে। ক্যান্ডিডেট নির্দিষ্ট সময়ে সামন আনব। কিন্তু যারা করেছে, আলোচনা করতে হবে, কথা বলতে হবে। যারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত, তারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই দেখবে। আমরা দেখছি, পার্টির কর্মীদের উৎসাহ।' গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝিকাড্ডায় ১৬টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ৩টি আসন।


আরও পড়ুন- পুরনো রেটেই নেওয়া হবে পার্কিং ফি, জানিয়ে দিল কলকাতা পুরসভা