ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও এরশাদ আলম, বীরভূম: জমি অধিগ্রহণ (Land Acquistion) ও উচ্ছেদ রুখতে রাজভবন (Raj Bhawan) অভিযানের ডাক দিয়েছে দেউচা-পাচামির (Deucha Pachami) 'আদিবাসী অধিকার মহাসভা'। এদিন সকালে এই যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল মহম্মদবাজার থানার মথুরাপুর গ্রাম থেকে। পরে সিউড়ি, বোলপুর, বর্ধমান, অশোকনগর হয়ে ১৪ এপ্রিল কলকাতা পৌঁছবেন কয়লা খনি বিরোধী কয়েকশো আদিবাসী মানুষজন।


কী কর্মসূচি?
প্রতিবাদীদের তরফে লিফলেট বিতরণ করে আরও মানুষজনকে এই কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার আবেদন জানানো শুরু হয়েছে। জল-জমি-জঙ্গলের অধিকার সুরক্ষিত করার দাবিতেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন দেউচা-পাচামির আদিবাসী অধিকার মহাসভার নেতৃত্ব।


প্রেক্ষাপট...
বৃহত্তম খোলামুখ কয়লা খনি হতে চলেছে বীরভূমের দেউচা-পাচামিতে ৷ এই খোলামুখ কয়লা খনির জন্য প্রায় ৩৪০০ একর জমির প্রয়োজন যার মধ্যে সরকারি জমি ১০০০ একর। বাকি জমি অধিগ্রহণ করতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো জমির মূল্য, ক্ষতিপূরণ ও চাকরির বিনিময়ে শুরু হয়েছে জমি অধিগ্রহণের কাজ। দেওচা-পাঁচামী এলাকায় কমপক্ষে ২১ হাজার মানুষের বাস৷ অধিকাংশই আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। বসতি অন্যত্র সরানোর পাশাপাশি কয়লা খনির জন্য ধ্বংস হবে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি। তাই প্রথম দিন থেকেই প্রস্তাবিত কয়লা খনির বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন দেউচা-পাচামির  অংশের আদিবাসী মানুষজন। নির্দিষ্ট করে বললে দেউচা পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ ঘিরে ২০২২ সালের গোড়াতেই তুঙ্গে উঠেছিল আন্দোলন। পরে ইচ্ছুক জমিদাতাদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেন মুখ্য়মন্ত্রী। তার পরও অবশ্য আন্দোলন পুরোপুরি স্তিমিত হয়নি। গত অক্টোবরে সেই আন্দোলন নিয়ে আক্রমণ শানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘পাশের রাজ্য থেকে মাওবাদী এনে সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা হয়েছে। দেউচা পাঁচামি নিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে বিরোধীরা।’এতেই শেষ নয়। তিনি বলেছিলেন, 'বাংলাকে ঘিরে ফেলার ষড়যন্ত্র চলেছে'। এ জন্য বিরোধীদের দিকেই আঙুল তোলেন তিনি। বিশেষত যে ভাবে বিভিন্ন সময়ে দেউচা পাঁচামি নিয়ে চক্রান্ত ও অপপ্রচার করা হয়েছে, তার নেপথ্যে সেখানকার মানুষকে পিছিয়ে দেওয়ারই পরিকল্পনা রয়েছে বলে মনে করেন ফিরহাদ হাকিম। সমস্ত কিছুকে 'বাংলাকে টেনে নামানোর কৌশল', বলেছেন তিনি। যদিও স্থানীয় মানুষ সমস্ত চক্রান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁদের শুভেচ্ছা জানাতেই এসেছেন ফিরহাদ, জানিয়েছেন সে কথাও। বক্তব্যের মাঝে এসেছে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির কথাও। পুরমন্ত্রীর কথায়, 'আমাদের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা নিশ্চিত ভাবেই আপনাদের কাছে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন।' এবার রাজ্যপালের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্যে মিছিল আদিবাসী অধিকার মহাসভার।


আরও পড়ুন:'মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ তৃণমূলের জাতীয় দলের স্বীকৃতি কেড়ে নেওয়ার জন্য', কটাক্ষ শুভেন্দুর