লাভপুর: 'কোটিপতি তৃণমূল নেতারা (TMC Leaders) যদি মনে করেন ইডি-সিবিআই (ED CBI) আসবে, তাঁদের খোলা মঞ্চে আসতে বলছি। চুরি ছাড়ুন, প্রকাশ্যে মঞ্চে আসুন, বলতে লজ্জা লাগলে কানে কানে বলুন', মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান অনুপম হাজরার (Anupam Hazra)। ইডি-সিবিআই থেকে বাঁচতে বিজেপিই কি রক্ষাকবচ? দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকের মন্তব্য ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
কী বললেন অনুপম?
'হাতে মোটা বালা...গলায় মোটা সোনার চেন বেঁধে যাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এই ধরনের যে নেতারা রয়েছেন, যাঁদের মনে হচ্ছে যে কোনও সময়ে ইডি-সিবিআই আসতে পারে, তাঁদের বলছি এখন থেকে চুরিটা বন্ধ করুন। আর আমার ফেসবুকে, একটা নম্বরও দেওয়া রয়েছে। যদি সামনে এসে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা বলতে লজ্জা লাগে, কানে কানে এসে বলে যান। আমরা দেখব, আপনাদের কী ভাবে কাজে লাগানো যায়', প্রকাশ্য সভা থেকে এই ধরনের আহ্বান শোনা গিয়েছে অনুুুুপম হাজরার মুখে। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকের এমন বার্তার পর তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
কী বলছেন রাজনৈতিক বিরোধীরা?
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের সাফ বক্তব্য, এটি দলের অবস্থান নয়। দল এই ধরনের কোনও মন্তব্য সমর্থন করে না। এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত হলে তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানাবেন। তাতে অবশ্য বিতর্ক থামছে না। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী যেমন বলেন, 'অনুপম হাজরা তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। দল পরিবর্তন করে বিজেপি। তৃণমূল নেতারা এটা বোঝেন যে বাস্তবে বিজেপি ও তৃণমূল করার মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তৃণমূলে থেকে যেমন বিজেপির কাজ করা যায়, বিজেপিতে থেকেও তৃণমূলের কাজ করা যায়।' কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের কটাক্ষ, 'এটাই তো প্র্যাকটিস। গত ১১ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে। তৃণমূলে থেকে চুরি করো। বিজেপিতে এসে সাদা হয়ে যাও। বিজেপিতে চুরি করো। তৃণমূলে এসে সাদা হয়ে যাও। তদন্ত তদন্ত খেলাটা চলতে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের ছেলেমেয়েরা শুধু রাস্তায় বসে থাকে।...ওঁর কথা থেকে স্পষ্ট বোঝা গেল, বিজেপিতে যাও, হাত ধুয়ে নাও।' অনুপমের আহ্বানে আমল দিতে নারাজ তৃণমূলের রাজ্য়সভা সাংসদ শান্তনু সেন। তাঁর প্রশ্ন, 'যিনি এই মন্তব্য করেছেন, তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা কতটুকু? তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি তৃণমূলের হাত ধরে। জীবনে এক বার এবং সম্ভবত শেষ বার সাংসদ হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ, তৃণমূলের বদান্যতায়।' এতেই শেষ নয়। তৃণমূল সাংসদের আরও কটাক্ষ, 'বিজেপি এমন একটা দল যারা 'মিসড কল' দিয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছিল। আর এখানে নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহকে এনে 'অব কি বার, ২০০ পার' বলে, মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি ফুটিয়ে ৭৭-এ পগাড় পার হয়ে যায়।' সঙ্গে সংযোজন, সেই ৭৭ কমতে কমতে এখন কত, তা বিরোধী নেতা নিজেই বলতে পারবেন না। এই অবস্থায় কখনও ভয় দেখিয়ে কখনও আবার অর্থের লোভ দেখিয়ে তারা দল ভাঙানোর চেষ্টা করছে, অভিযোগ শান্তনু সেনের।