এরশাদ আলম, বীরভূম: তৃণমূলের (TMC) গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে সরকারি খাস জমিতে চাষ করার অভিযোগে রাস্তায় নামলেন দলেরই উপপ্রধান। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান। এ নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে তৃণমূল (tmc) ও বিজেপির (BJP) মধ্যে। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে জমা পড়েছে অভিযোগ। 


জমি জবরদখল বিতর্কের জেরে সরগরম বীরভূমের সাইঁথিয়া। তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে সরকারি খাস জমি দখল করে চাষ করার অভিযোগে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন শাসকদলেরই উপপ্রধান। 


বীরভূমের (Birbhum) সাঁইথিয়া ব্লকের কুনলা মৌজায় ৬৫ বিঘা খাস জমি দখল করে চাষ করার অভিযোগ উঠেছে বনগ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১ জুন জেলাশাসক ও বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দেওয়া হয়। 


অভিযোগের পর বেশ কিছুদিন কেটে গেলেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগকারীদের দাবি। ওই সরকারি জমির পাট্টা আদিবাসীদের মধ্যে বিলি ও প্রধানকে গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ সাঁইথিয়ার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের দফতরের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন উপপ্রধান। প্রায় ১ ঘণ্টা অবরোধ করা হয় রাস্তা। পরে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। 


সাঁইথিয়ার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও উপপ্রধান জনার্দন বাগদির কথায়, ৬৫ বিঘা সরকারি খাস জমি দখল করে প্রদান চাষ করছেন। ওই জমি আদিবাসীদের মধ্যে পাট্টা বিলিয়ে দিতে হবে। পঞ্চায়েত প্রদানকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। 


অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। তৃণমূল নেতা ও বনগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তুষারকান্তি মণ্ডলের কথায়, ২০১৮ সালে এখানে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়, সেই কারণে কে কতটা দল করেন, তা দেখা হয়নি। তাই হয়ত উপপ্রধান এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। দল এবার বিচার করবে। আমি কোনও সরকারি খাস জমি দখল করে চাষ করিনি। অভিযোগ মিথ্যা।


এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বীরভূমের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, কেউ একটা অভিযোগ করলেই তা যতক্ষণ না প্রমাণ হবে, কিছু বলা উচিত নয়। প্রশাসন তদন্ত করছে। আমরা দলগত ভাবেও তদন্ত শুরু করেছি। যদি প্রধান দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে শাস্তি হবে। বিজেপির এখানে কোনও সংগঠন নেই, তাই ভুলভাল বলছে। 


এই প্রসঙ্গে সাঁইথিয়ার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সাঁইথিয়ার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক কৌশিক চৌধুরী জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছি। আমরা প্রাথমিক তদন্তে পেয়েছি, ওই জায়গায় ৬৫ বিঘা সরকারি খাস জমি আছে।  সেখানে চাষ করচেন পঞ্চায়েত প্রধান। আমরা উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জানিয়েছি। এখন প্রশসন কী পদক্ষেপ করে, সেদিকেই তাকিয়ে গ্রামবাসীরা।