ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: মন্দিরে সংস্কারের জন্য শনিবার থেকে বন্ধ থাকবে বক্রেশ্বর শিব মন্দিরের গর্ভগৃহ (Bakreshwar Temple )। শনিবার থেকে তিন দিন অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ থাকবে মন্দির। এর ফলে ভক্তরা পুজো দিতে পারবেন না। মঙ্গলবার মন্দির খুললেও গর্ভগৃহের ভিতরে ঢুকে পুজো দেওয়া যাবে না। বুধবার থেকে মন্দিরে স্বাভাবিক ভাবে পুজো দেওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই এই জেলায় মন্দিরের গর্ভগৃহের সংস্কারের জন্য স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তারাপীঠের তারা মায়ের মূর্তি। তারাপীঠের ভৈরবের মন্দিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল মাকে। মন্দির কমিটির তরফে খবর এসেছিল, গর্ভগৃহ ও বেদি সংস্কারের পাশাপাশি মন্দিরে রঙও করা হবে। ফলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তারা মায়ের মূর্তি। করোনাকালে গর্ভগৃহ সংস্কার করা যায়নি। তাই চলতি বছরেই গর্ভগৃহ ও বেদি সংস্কার করা হয়।
অপরদিকে, এখানে রয়েছে সাধক বামাক্ষ্যাপার সমাধিমন্দির। জানা যায়, এই মন্দিরেই পুজো করতেন বামক্ষ্যাপা। মন্দির লাগোয়া শ্মশানক্ষেত্রে বাবা কৈলাসপতি নামে এক তান্ত্রিকের কাছে তন্ত্রসাধনা করতেন তিনি। মা তারার আরাধনা এবং পুজোতেই বামাক্ষ্যাপা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তারাপীঠ মন্দিরের কাছেই রয়েছে সেই আশ্রম। তারাপীঠ মন্দির নিয়ে নানা কথিত বিশ্বাস রয়েছে, আছে নানা কাহিনী। অনেকে বলেন এটি সতীপীঠ নয়, তা হল কঙ্কালীতলা। অনেকে বলে থাকেন, এখানে সতীর তৃতীয় নয়ন পতিত হয়েছিল। ঋষি বশিষ্ঠ প্রথম সেটি দেখে সতীকেই তারারূপে পুজো করেন।
আরও পড়ুন, টমেটোর গাড়িতে তল্লাশি চালাতেই চক্ষু চড়কগাছ ! গ্রেফতার চালক
প্রসঙ্গত, ঐতিহাসিক স্থাপত্যই হোক কিংবা মন্দির, সর্বত্রই সংষ্কারের প্রয়োজন। কারণ দেশ তথা রাজ্যের অধিকাংশ মন্দিরই প্রায় কম করে হলেও ৭০ বছরের উর্ধ্বে, কখনও কখনও তা ২০০ বছরের বেশিও হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে চুন বালি সুড়কি দীর্ঘ সময় ধরে ধরে রাখলেও, ক্ষয়রোগ আসে মন্দিরেও। এমনকি অন্যান্য পাথরেও তা ধরা পড়ে। মূলত বাতাসে এবং বৃষ্টির মধ্যে থাকে একাধিক অ্যাসিড। যা ক্রমান্বয়ে বছরের পর বছর চুন সুড়কি হোক কিংবা পাথর, প্রতিটা উপাদানের সঙ্গেই বিক্রিয়া করে। আর সেখান থেকেই শুরু হয় ক্ষয় রোগ। তাই সংস্কারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে কখনও কখনও উদ্যোগ নেওয়া হলেও কখনও কখনও আর্থিক ইস্যু এবং কখনও কখনও কোভিড ইস্যুও এসে পড়ে। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে রাত পেরোলেই চলবে বক্রেশ্বর শিব মন্দিরের গর্ভগৃহে চলবে সংস্কারের কাজ।