ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর : দীর্ঘ টালবাহানার প্রায় তিন বছর পর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে বসতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। কিন্তু, এবার পৌষ মেলার প্লট বুকিংয়ে উঠল দুর্নীতির অভিযোগ ৷ ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যায় প্লট বুকিং। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম পুলিশের। পৌষ মেলার স্টলের জন্য প্লট বুকিংয়ের টাকা সরকারের কোন খাতে জমা পড়ছে তা নিয়ে কোনও সদুত্তর নেই৷ প্লট বুকিংয়ে দালাল চক্র কাজ করছে বলেও অভিযোগ। অথচ, এই প্রথম পূর্বপল্লির মাঠে পৌষ মেলা করছে রাজ্য সরকার।


এনিয়ে বোলপুর-শ্রীনিকেতন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাজি মহম্মদ হানিফ বলেন, "জিএসটি নম্বর নেই কেন বলতে পারব না ৷ দেখছি বিষয়টা। পরে হয়তো নম্বর দেবে। আর কোন খাতে টাকা যাচ্ছে তা মহকুমা শাসক বলতে পারবেন।"


২০১৯ সালে শেষ বার শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা। তারপর থেকে আর হয়নি মেলা ৷ তবে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে ২০২১ ও '২২ সালে বিকল্প পৌষ মেলা করেছিল রাজ্য সরকার।


এবার উপাচার্য হিসাবে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হতেই সকলে মনে করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ মেলা করবেন ৷ কিন্তু, তা করেননি ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার মেলা করার জন্য বিশ্বভারতীর কাছে পৌষ মেলার মাঠ চেয়ে আবেদন করে। দীর্ঘ টালবাহানার পর মাঠ দেয় বিশ্বভারতী। 


অর্থাৎ, ২০১৯ সালের পর পূর্বপল্লির মাঠে হচ্ছে পৌষ মেলা। তবে, এই মেলার আয়োজনে রাজ্য সরকার ৷ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে মেলার স্টলের জন্য প্লট বুকিং। আর এই প্লট বুকিং নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল ৷ ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যায় প্লট বুকিংয়ের অফিস ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ। অভিযোগ, নম্বর ছাড়াই নেওয়া হচ্ছে জিএসটি। শুধু স্টেট জিএসটি নয়, সেন্ট্রাল জিএসটিও নেওয়া হচ্ছে। অথচ কোনও জিএসটি নম্বর নেই ৷ যা সম্পূর্ণ বেআইনি ৷ এমনকী, রাজ্য সরকার মেলা করলেও সরকারের কোন খাতে এই প্লট বুকিংয়ের টাকা জমা পড়ছে তার উল্লেখ নেই৷ ব্যবসায়ীরা যথারীতি জিএসটি নম্বর ছাড়াই জিএসটি দিয়ে প্লট বুক করছেন৷  আরও অভিযোগ, প্লট বুকিংয়ে কাজ করছে দালাল চক্র। 


২০২২ সালে ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প পৌষ মেলায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। তারপরেই পূর্বপল্লির পৌষ মেলার প্লট বুকিংয়ের প্রথম দিনে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। যদিও এনিয়ে মন্তব্য করতে চাননি মহকুমা শাসক ও জেলাশাসক।