ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম:  আজও অশান্ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)। টানা ১৬ দিনে পড়ল ছাত্র আন্দোলন। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সরকারি বাসভবনের সামনে ধর্নামঞ্চ করে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ করছে ছাত্রছাত্রীরা (Student)। বুধবার রাতে তারা উপাসনা গৃহ থেকে উপাচার্যের সরকারি বাসভবন পর্যন্ত মশাল মিছিল করে। পরে তারা জানিয়ে দিয়েছেন, 'যতক্ষন পর্যন্ত উপাচার্য পদত্যাগ না করবে এবং  কতৃপক্ষ তাদের দাবি না মানবে ততক্ষন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।' 


নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সংঘর্ষ, উপাচার্যকে করা হল উদ্ধার 


এদিকে এই পরিস্থিতির মধ্যে বন্ধ করা হল সাপ্তাহিক উপাসনা। প্রতি বুধবার উপাসনা গৃহে এই উপাসনা হয়ে থাকে। এদিন নিয়ম মেনে ছাত্রছাত্রীরা উপাসনা গৃহে আসে কিন্তু শেষ মূহুর্তে উপাসনা বন্ধ করা হয়। যা নিয়ে চূরান্ত বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রবীন আশ্রমিক তথা ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর অভিযোগ করেন, উপাচার্য নিজের সমস্যা বিশ্বভারতী উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। ২৩ নভেম্বর রাত্রে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর অফিসে ঢুকে তাঁকে ঘেরাও করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। পরে পুলিশ এসে রাত ২টো নাগাদ উপাচার্যকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় বিশ্বভারতীর বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সংঘর্ষে দুই পক্ষের তিন জন আহত হয়। পরে শান্তিনিকেতন থানায় দুই পক্ষে অভিযোগ করে। 


আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে


এর পর থেকে উপাচার্যের সরকারি বাসভবনে সামনে ধর্না মঞ্চ করে বিক্ষোভ করে আসছে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা। এর মধ্যে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী তার বাসভবন থেকে মঙ্গলবার বিকালে গাড়ি করে বেড় হবার চেষ্টা করলে গাড়ির সামনে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা শুয়ে পড়ে। প্রবীন আশ্রমিক  এবং ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর জানান, 'কেন উপাসন বন্ধ থাকবে ? কেন অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে ? আমি বুঝতে পারছি না ! ওনাকে ঘেরাও করেছে, ওনার সমস্যা ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে মেটাতে হবে। সেটা ওনার সমস্যা, তার জন্য বিশ্বভারতীর সব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে সেটা আমি বুঝতে পারছি না। উনি সব সময় নিজের সমস্যাটেকে বিশ্বভারতীর ঘারে চাপিয়ে দিচ্ছেন। এটা ঠিক নয়, এটা ওনার করাও উচিত নয়। এই ধরণের পরিবেশ আমি কোনও দিন দেখিনি। আমি দীর্ঘদিন বিশ্বভারতী সাথে যুক্ত ছিলাম। অনেক ঘেরাও হয়ে। কিন্তু সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার পরিস্থিতি আমি কখনো দেখিনি।' 


আরও পড়ুন, 'গুজরাতে ঐতিহাসিক ফলের পথে বিজেপি', প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানালেন শুভেন্দু


১৬ দিনে পড়ল ছাত্র আন্দোলন


গবেষণারত  আন্দোলনকারী ছাত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য, ছাত্র আন্দোলন আজকে ১৬ দিনে পড়েছে। গত কাল ছাত্রছাত্রীরা মশাল নিয়ে মিছিল করে ছিল। উপাচার্যকে আমরা আমাদের সমস্যা জানাতে পারি না। ১৬ দিন এই ঠান্ডাতে ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করছে কিন্তু তিনি একবারও আমাদের কথা শোনেনি। গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ার পরেও তিনি জানতে চাননি আমাদের কি সমস্যা ? আন্দোলনরত ছাত্র সোমনাথ জানান, আমরা জানতে পেরেছি ভারতের প্রধান বিচারপতি শান্তিনিকেতন আসছেন। উপাচার্য তেকে আমন্ত্রন করেছেন পাঠভনের সমাবর্তনে আসার জন্য। বিশ্বভারতীতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর তালিবানি শাসন ব্যবস্থা চলছে। এই জন্য প্রধান বিচারপতি কে বিশ্বভারতীর সম্বন্ধে একটি রিপোর্ট ইমেল মারফত জানিয়েছি। উনি এলে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।  উপাচার্য চেষ্ট করবে ছাত্রছাত্রীদের মার খাওয়ানোর।