পরিতোষ দাস, বীরভূম : ৫১সতী পীঠের অন্যতম সতীপীঠ হল বীরভূমে লাভপুরের মা ফুল্লরা। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মাঘী পূর্ণিমার এই বিশেষ দিনটিতে হয় মায়ের বিশেষ পূজা অর্চনা। প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত আছে নন্দ গিরি মহারাজ কেদারনাথ থেকে স্বপ্নাদেশ পেয়ে লাভপুরে এসেছিলেন, জঙ্গলের ভেতর খুঁজে পেয়েছিলেন শিলাখণ্ড। কথিত আছে, দেবী সতীর এখানে ঊর্ধ্ব ওষ্ঠ পড়েছিল, তাই প্রাচীনকালে এই স্থানের নাম ছিল অট্টহাস। আবার অন্য মত বলে, এখানে মায়ের গর্ভস্থ ফুল পড়েছিল। রামচন্দ্রের অকালবোধনের জন্য এখান থেকেই পদ্ম ফুল সংগ্রহ করেছিল হনুমান।দেবী মাকে এখানে ফুল্লরা নামে সম্বোধন করা হয়।
সতী দেহ কাঁধে নিয়ে শিবের তাণ্ডব। আর চরাচরকে রক্ষা করতে সতীর দেহে বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রের আঘাত। যে সব জায়গায় সতীর দেহাংশ পড়েছিল, সেগুলিই এক-একটি সতীপীঠ।
বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রে ৫১টি টুকরো হয়ে যাওয়া সতীর দেহ অংশ যেখানে যেখানে পড়েছিল সেখানেই গড়ে উঠেছে সতীপীঠ। কোন সতীপীঠে সতীর দেহের কোন অংশ বা অলঙ্কার পড়েছিল তা জানতে উৎসাহের খামতি নেই। এই রাজ্যে যার সংখ্যা ১২। তারই মধ্যে ফুল্লরা দেবীর মন্দির একটি।
আরও পড়ুন :
আশ্বিনের ভোরে মহিষাসুরমর্দিনী-র সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠ, ভিড় করছে স্মৃতি
আজকের এই পুণ্য তিথিতে প্রাচীনকালে কৃষ্ণনন্দ গিরি মহারাজ মায়ের বিশেষ কৃপা লাভ করেছিলেন। আর সেই প্রাচীনকাল থেকেই এই মাঘী পূর্ণিমার বিশেষ দিনটিতে হয়ে থাকে বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা। আর তাই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই তিথিতে মায়ের কাছে পুজো দিতে, বিশ্বাস এই দিনে মায়ের কাছে প্রার্থনা করলে তা পূর্ণ হয়। তাই অনেকেই ভক্তিভরে মায়ের পুজো দেন এদিন এবং মানত করে মন্দিরের পাশে গাছের ডালে ঢিল বাঁধার প্রচলনও রয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস এখানে ঢিল বেঁধে দেবীর কাছে মানত করলে তা পূর্ণ হয় এবং পরবর্তীকালে, তা পূর্ণ হলে মায়ের কাছে পুনরায় পুজো দিয়ে যান।
সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে ভিড় জমিয়েছেন মা ফুল্লরা মন্দিরে। আর এই উপলক্ষে বসে মেলাও।