এরশাদ আলম, বীরভূম: চালকল থেকে শুরু করে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট, একের পর এক সংস্থা। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর, তাঁর মেয়ে ও প্রয়াত স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি হদিশ পেয়েছে CBI। শুধু অনুব্রত মণ্ডল নয়, তাঁর দেহরক্ষী ধৃত সায়গল হোসেনেরও বীরভূমে বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। 


এই প্রেক্ষাপটেই অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুক বীরভূমের দুবরাজপুরের একাধিক জায়গায় পড়ল পোস্টার।  বাদ গেল না তৃণমূলের পার্টি অফিসও। যেখানে যশপুরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ কাঞ্চন এবং তৃণমূল পরিচালিত দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পরিমল সৌয়ের সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরে নিশানা করা হয়েছে। 


পোস্টারে দাবি করা হয়েছে, শেখ কাঞ্চনের ৮০ লক্ষ টাকার বিলাসবহুল বাড়ি, ২৭ লক্ষের আম বাগান, ৪টি পুকুর এবং ১৭ বিঘা জমি রয়েছে। পাশাপাশি পরিমল সৌ-এর বাড়িতে হাঁড়ি ভর্তি সোনা, গোলা ভর্তি টাকা রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে পোস্টার। 


কিন্তু কারা এই পোস্টার দিয়েছে, তার উল্লেখ করা না হলেও পোস্টারটি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুবরাজপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রকে উদ্দেশ্য করে। পাশে লেখা খেলা হবে পঞ্চায়েতে।  


আরও পড়ুন, গায়ে কেউটে সাপ জড়িয়ে নিশ্চিন্তে ঘুম মহিলার! ভিডিও দেখে শিহরিত নেটিজেনরা


তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি তৃণমূলের পার্টি অফিসের বাইরেও লাগানো হয়েছিল পোস্টারটি। যদিও পরে কেউ সেটি ছিঁড়ে ফেলেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে, বীরভূমে ১১টি কেন্দ্রের মধ্যে শুধুমাত্র দুবরাজপুরে জিতেছে বিজেপি। তবে বিরোধী কোনও দলের নাম না নিলেও, পোস্টার দেওয়ার নেপথ্যে ষড়যন্ত্র দেখছেন তৃণমূল নেতা পরিমল সাউ।


দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পরিমল সাউ বলেন, "রাতে কেউ বা কারা লাগিয়েছে। এই সম্পত্তি আমার নেই, যতটুকু আছে পৈতৃক, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।" বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি, যশপুরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ কাঞ্চন।


দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা বলেন, "এই সব ঘটনা কারা করেছে জানা নেই। কিন্তু এই ঘটনা সত্যি, তৃণমূলের নেতারাই দায়ী, কারণ গরিবদের বঞ্চিত করে নিজেদের পকেটে ভরেছে।" বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, "এটা গ্রাম্য বিষয় এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। যেহেতু ওরা আমাদের দলের লোক, তাই দলীয় ভাবে তদন্ত করব। এছাড়াও এখনও অনেকে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করেছে।" 


পোস্টার দেওয়ার নেপথ্যে কারা, তা নিয়ে জল্পনা থাকলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই পোস্টার ঘিরেই সরগরম দুবরাজপুরের রাজনীতি।