ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও পরিতোষ দাস, বীরভূম: বীরভূমের নানুরে ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। এবার অঞ্চল সভাপতিকে মেরেধরে পার্টি অফিস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান বোলপুরের এসডিপিও। পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের কোন্দল আরও বাড়বে বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। এই নিয়ে অস্বস্তি ঢাকতে সিউড়ির সভা থেকে কড়া বার্তা দিলেন ফিরহাদ হাকিম।
গরমে পুড়ছে বাংলা। তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূলের ঘরোয়া বিবাদ। ফের উত্তপ্ত কাজল শেখের খাসতালুক নানুরের মাটি। পয়লা বৈশাখের দিন, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে অঞ্চল অফিস থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে।
প্রতিদিনের মতোই শনিবার নানুরের থুপসাড়া অঞ্চল পার্টি অফিসে গিয়েছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বাপ্পা চৌধুরী। অভিযোগ, ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যর অনুগামীরা তাঁকে পার্টি অফিসে ঢুকতে বাধা দেন। অঞ্চল সভাপতিকে বের করে দেন তাঁরা। যদিও, অভিযুক্তদের দু্ষ্কৃতী বলে দাবি করেছেন অঞ্চল সভাপতি।
খবর পেয়ে বোলপুরের এসডিপিও-র নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী বাসাপাড়ায় তৃণমূলের অঞ্চল পার্টি অফিসের সামনে পৌঁছে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বাপ্পা চৌধুরী অনুব্রত ঘনিষ্ঠ কেরিম খানের অনুগামী। অন্যদিকে, বাপ্পার বিরুদ্ধ গোষ্ঠী ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যর ঘনিষ্ঠ। ক্ষমতার রাশ হাতে রাখা নিয়েই দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব।
ফোনে যোগাযোগ করলেও সাড়া মেলেনি ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যর। আর শাসকদলের এই কোন্দলকে হাতিয়ার করেই আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। এই ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলের। রবিবার অমিত শা-র পাল্টা সভা করতে গিয়ে, সাংবাদিক বৈঠকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়া বার্তা দেন ফিরহাদ হাকিম।
গত মাসেই বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সতর্ক করে দিয়েছিলেন নানুরের তৃণমূল নেতা ও কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখকে।
তার পরের দিনই নানুরে নিজেদের পার্টি অফিসের মধ্যেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠ সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি রিঙ্কু চৌধুরীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। কাজল শেখ ও নানুরের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য-সহ ১৭ জন নেতা, কর্মীর থানায় অভিযোগ দায়েরও হয়। এবার অঞ্চল সভাপতিকে ঘাড়ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে।