ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: রাস্তার দুই ধারে সারি দিয়ে রয়েছে গাছ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যে কোনও জায়গায় ইচ্ছেমতো গাছ (Tree) কাটা যায় না। তার জন্য বিস্তর প্রশাসনিক অনুমতির প্রয়োজন। কিন্তু সেসব নাকি মানাই হয়নি। শুধু তাই নয়, বেআইনি ভাবে গাছ কাটা যেমন হয়েছে, তেমনই সেগুলি বিক্রি করে নাকি টাকাও আত্মসাৎ করে নেওয়া হয়েছে। বীরভূমের (Birbhum) ময়ূরেশ্বরে উঠল এমনই অভিযোগ। বিজেপির মণ্ডল সভাপতির নিশানায় তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান। গোটা ঘটনায় বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপির ওই নেতা। গাছ কাটার কথা স্বীকার করলেও টাকা লোপাটের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত প্রধান।          


কোথায় কাটা হয়েছে গাছ?
বীরভূমের ময়ূরেশ্বর। সেখানেই রয়েছে তালোয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। ওই এলাকায় গোরাবাজার থেকে হাজিপুর যাওয়ার রাস্তার দুই ধারে সারি দিয়ে রয়েছে একাধিক বড় গাছ। সেইখান থেকেই উধাও বেশ কয়েকটি গাছ। যা নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই এলাকায় থেকে অন্তত ৩৫টি গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। যার বাজারমূল্য কমপক্ষে তিন লক্ষ টাকা বলে দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতা সমাপ্ত মণ্ডলের। গাছ কেটে বিক্রি করে পুরো টাকা স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান লোপাট করে দিয়েছেন বলে তাঁর অভিযোগ।     


বিজেপির অভিযোগ:
ময়ূরেশ্বরের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সমাপ্ত মণ্ডল বলেন, 'এই গাছগুলি তালোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পূর্নিমা বাগদী ও উপপ্রধান মহম্মদ সাহেরুল শেখ উপস্থিত থেকে কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। কোনওরকম নিয়ম না মেনে বিক্রি করে নিজেরা টাকা আত্মসাৎ করেছেন।' তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে বিডিও-কে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা।


কী বলেছেন অভিযুক্ত:
গাছ কাটা হয়েছে, সেই কথা স্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধান। যদিও গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ-এর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
তালোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তৃণমূল নেত্রী পূর্ণিমা বাগদি বলেন, 'আমরা উপস্থিত থেকে গাছগুলি কেটেছি, নিয়ম মেনে কেটেছি। তবে গাছগুলির অত টাকা দাম না। টাকাগুলো আমরা পঞ্চায়েতের তহবিলে জমা করেছি। শুকনো গাছ বিপজ্জনক ভাবে ছিল বলে কাটা হয়েছে। যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা।'


প্রশাসনের আশ্বাস:
অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও। ময়ূরেশ্বর ১-এর বিডিও অর্ঘ্য গুহ বলেন, 'আমরা পুরো বিষয় তদন্ত করে দেখব, অভিযোগ পেয়েছি, সেই অনুযায়ী তদন্ত করে দেখা হবে।'


মাস খানেক আগেই, বীরভূমেই প্রায় একই রকম অভিযোগ উঠেছিল। বোলপুর-শ্রীনিকেতনের কসবা পঞ্চায়েতে টেন্ডার ছাড়াই কাটা গাছ বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে চরমে পৌঁছেছিল রাজনৈতিক তরজা।


আরও পড়ুন: বাড়ছে উদ্বেগ, উপসর্গ বদলাচ্ছে ডেঙ্গি, দেখা দিচ্ছে কী কী নতুন সমস্যা?