গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: সিউড়ির চট্টরাজবাড়ির দুর্গাপুজো এবার ২০০ বছরে পদার্পণ করল। এই পুজো শুরু করেননি ভৈরব চট্টরাজ। কথিত আছে, এই পুজো তাঁর মামার বাড়ির, তিনি পরে তার বাড়িতে পুজো নিয়ে আসেন। আজ প্রায় ২00 বছর পেরিয়ে গেলেও পুজোর দিন গুলো চট্টরাজ বাড়ির মন্দির প্রাঙ্গণ গমগম করে সকলের আনন্দ উল্লাসে।
এই পরিবারের সদস্য ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক সুনীতি চট্টরাজ । শত ব্যস্ততার মাঝেও এই কয়েকটা দিন তিনি কাটাতেন এই পুজো মণ্ডপে। প্রতিবছর দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয় রথের দিন থেকে , মায়ের কাঠামোতে প্রথম মাটি দেওয়া হয় সেদিন। যাঁরা প্রতিমা তৈরি করেন কিংবা পুজোর ঢাক বাজান, তাঁরা বংশ পরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন। পুজোর সময় তিনদিন এই এখানে পাঠা বলি রেওয়াজ আছে।
অষ্টমীর দিন সাদা রঙের পাঁঠা বলি দেওয়া হয় এবং নবমীর দিন কালো পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। রীতি মেনে অষ্টমীর দিন পুজো হয় নিঃশব্দে, বাজে না কোনও ঢাক কাঁসর ঘন্টা। মায়ের মহাষ্টমীর ভোগে থাকে পোলাও, পায়েস, সাত রকমের ভাজা, পনির সহ আরো অনেক পদ। এই পুজোর আরেকটি বিশেষত্ব হলো এখানে নবপত্রিকা স্নান ও বিসর্জন করাতে নিয়ে যাওয়া হয় কাঁধে করে দোলার মতো করে। এমনকি বিসর্জনের সময় মায়ের প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় কাঁধে করে এবং এর দায়িত্ব থাকে ধাঙড় সম্প্রদায়ের কিছু লোকের ওপর।
সমাজের সকল স্তরের মানুষদের একত্রিত করতে এই প্রথা শুরু হয়েছিল প্রথম থেকে। এছাড়াও পুজোর দিন গুলিতে অষ্টমীর দিন সন্ধি পুজোর সময় বাড়ির পরিবারের নামে সিন্দুরের থালা দেওয়া হয় মায়ের বেদীতে, দশমীর দিন ঘট বিসর্জন হয়। কথিত আছে, এরপর সেই থালা গুলি বের করা হলে সেখানে মায়ের পায়ের ছাপ পাওয়া যায়। পুজোর পাঁচটা দিন দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বাড়ির সকল সদস্য একত্রিত হন এই পুজোয়।