গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম:  মহম্মদ বাজারের গণপুর এর সরকার বাড়ির দুর্গা পুজো এবছর ২৩২ বছরে পদার্পণ করল ।এই পুজো আনুমানিক ১৭৯০ সালে শুরু করেছিলেন হরিদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎকালীন গোয়াড়ি কৃষ্ণনগর, যা বর্তমানে নদিয়া জেলার  অন্তর্গত, সেখান থেকে সপরিবারে এসে গণপুরে বসবাস শুরু করেন তাঁরা। সেখান থেকে সঙ্গে নিয়ে আসা শালগ্রামের শিলা মূর্তিতে শুরু হয় পুজো । পরবর্তীকালে তাঁর নাতি অভয়চরণ বন্দ্যোপাধ্যায় মন্দির ও প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তাঁরা সরকার উপাধিতে ভূষিত হন। ঠিক সেই কারণেই বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজো সরকার বাড়ির দুর্গা পুজো নামে খ্যাত হয়।


অধুনা এই নামেই পরিচিত এই পরিবার। বর্তমানে তাঁদের সপ্তম পুরুষ গুরুদাস সরকার জানান, এখানে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পুরনো রীতি মেনেই পূজা-অর্চনা চলে। প্রতি বছরই বীরভূমের কাঁকড়তলা এলাকার বাবুইজোড় গ্রাম থেকেই ঢোলবাদকঁরা তাদের পুজোতে ঢোল বাজান।  এই রীতি আজও বয়ে নিয়ে চলেছে সরকার পরিবার। এছাড়াও পুজোর তিন দিন রয়েছে ছাগ বলি দেওয়ার রীতি।


ষষ্ঠীর দিনে দেবী দুর্গাকে ফল, চিঁড়ে মিষ্টান্ন ভোগ দেওয়া হয়। এরপর সপ্তমীতে দোলা নিয়ে এসে নবপত্রিকাকে আনা হয়। সেই মুহূর্তে পরিবারের মহিলারা মন্দিরের উঠানে সেই নবপত্রিকা কে আবাহন করেন। মহাষ্টমী ও মহানবমীর মিলনক্ষণে হয় সন্ধিপুজো। এই সময় দেবীকে অন্নভোগ দেওয়া হয়। এছাড়াও পঞ্জিকা সময় ও রীতি মেনে হয়ে আসছে মহাদশমীতে পরিবারের মহিলারা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। দশমীর দিন সকালেই ঘট বিসর্জন ও প্রতিমা বিসর্জন হয়। এই গ্রামে এক অভিনব রীতি আছে। একাদশীর দিন সরকার বাড়ির নবপত্রিকা বিসর্জন হয়। 


পুজোর দিন গুলিতে সরকার  বাড়ির সদস্যরা আনন্দে মেতে ওঠেন । বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করা পরিবারের সদস্যরা এই সময় সকলে একত্রিত হয়ে পুজো পুজোর দিন গুলিকে উপভোগ করেন। এই পুজো বিভিন্ন জেলা থেকে  দেখতে আসেন মানুষ।