আবীর দত্ত, রামপুরহাট: বগটুইকাণ্ডের প্রতিবাদের এবার পথে নামল সেই গ্রামের বাসিন্দারা। গত ২ দিন ধরে অশান্ত হয়েছে রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম। এবার গ্রামে শান্তির দাবিতে মিছিলে নামলেন গ্রামবাসীরা। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে পথে নামলেন মহিলারা। মুখে মুখে শুধুই স্লোগান, ''আমরা গ্রামে শান্তি চাই। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।" এদিন এলাকার সব মহিলারা একত্র হয়ে এই মিছিলে হাঁটেন।


 


এদিকে, বগটুইকাণ্ডে মৃতদের শেষকৃত্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। মৃতদের পরিবারের দাবি, দূর সম্পর্কের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে কেউ মৃতদেহ শনাক্ত করেছেন। যাঁকে তাঁরা চেনেন না। তাহলে কি কিছু আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। যদিও, তা মানতে নারাজ তৃণমূল।


বগটুই গ্রামে হত্যালীলা নিয়ে বহু প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা! তবে এরইমধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয়ে জীবন্ত মৃতদের তড়িঘড়ি শেষকৃত্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক! বগটুই গ্রামে যে বাড়িগুলো পুড়ে গেছে, তার মধ্যে একটা বাড়ি মিহিলাল শেখের। দুই মেয়েকে নিয়ে মিহিলাল সাঁইথিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু, এর মধ্যে রামপুরহাটে তাঁর পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহের শেষকৃত্য সেরে ফেলা হয়েছে। মিহিলালের দাবি,  দূর সম্পর্কের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি মৃতদেহগুলি সনাক্ত করেছেন। যাঁকে তাঁরা কেউ চেনেনই না! এই দাবি ঘিরেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, তাহলে কি কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে?


বগটুইকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন মোদি


বগটুই হত্যালীলা (Birbhum violence) নিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে একটি গ্যালারির ভার্চুয়াল উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি বাংলার সরকার দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে। বীরভূমে জঘন্য পাপ হয়েছে, দোষীদের যেন ক্ষমা না করা হয়। অপরাধীদের সাহস যারা বাড়িয়েছে, তাদের যেন ক্ষমা না করা হয়। যারা এই হত্যালীলা ঘটিয়েছে, তাদের যেন বাংলার মানুষ ক্ষমা না করে। অপরাধীদের দ্রুত সাজা দেওয়ার জন্য রাজ্যকে সাহায্য করবে কেন্দ্র।’


পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া


বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বে রাজ্য সরকার (West Bengal Government) এই জঘন্যতম ঘটনাটিকে দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনক বলেছে। শুধু তা-ই নয়, দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে। রামপুরহাটের স্থানীয় ওসি-েক বিলম্বিত করা হয়েছে, এসডিপিও-কে বিলম্বিত করা হয়েছে। রাজ্য সরকার ও প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে আইনের শাসন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের সরকার এই ঘটনার কথা শুনে প্রথমেই ডিজি-কে পাঠিয়েছে, এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা)-কে নিয়ে সিট গঠন করেছে। এ ব্যাপারে কোনওরকম দুর্বলতা নেই। প্রশাসন কঠোরভাবেই এর মোকাবিলা করছে। এটা শুনে ভাল লাগছে যে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে সাহায্য করবে। রাজ্য পুলিশের উপর আমাদের ভরসা আছে। প্রশাসনের উপর আমাদের ভরসা আছে। এই ঘটনায় যারা দোষী, তাদের খুঁজে বের করে সাজা দেওয়া হবে।’